সৈকতে এবারো হচ্ছে না থার্টি ফার্স্ট উদযাপন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৫৮ এএম

কক্সবাজার, সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ভিড়। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার, সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের ভিড়। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল ২০২২ সাল। আর মাত্র দুইদিন পরে চলে আসবে ২০২৩ সাল। তাই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পৃথিবীখ্যাত সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ছুটে আসছে লাখ লাখ পর্যটক। নতুন বছর উপলক্ষে কক্সবাজারে নানা ধরনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করা হয়েছে। 

বছরের শেষদিন অথবা শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এবং নব বর্ষকে বরণ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো লাখ লাখ পর্যটক আসছেন পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে। ইতিমধ্যে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারে প্রায় ১৫ লাখ পর্যটক আগমন করেছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছে তিন লাখ পর্যটক। ৩১ তারিখের আগে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় হোটেল-মোটেলের ৭০ ভাগ বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। 

জানা গেছে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বা পাবলিক প্লেসে বড় কোন অনুষ্ঠান থাকছে না। তবে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বড় পরিসরে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন হবে। শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় ও রাতে বিভিন্ন হোটেলের ভিতর আয়োজনের মাধ্যমে এবং বিশাল সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়িয়ে ইংরেজি নতুন বছর ২০২২ সালকে বরণ করতে থাকছে নানা আয়োজন।

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, ২০ তারিখের পর থেকে কক্সবাজারে প্রায় ১৫ লাখের কাছাকাছি পর্যটক আগমন করেছেন। ৩১ তারিখ পর্যন্ত কক্সবাজারে আরো বেশ কিছু পর্যটক থাকবেন। বর্তমানে কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটক অবস্থান করছে। মুকিম খান জানান, শেষ হয়ে গেল ২০২২  সাল। আসছে থার্টি ফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেলগুলোকে আলাদা করে সাজানো হচ্ছে। নববর্ষের সাজ-সজ্জাসহ নানা ধরণের কারুকার্য করছে। ইতিমধ্যে অনেক হোটেল কাজ সম্পন্ন করেছেন। হোটেল-মোটেলে বুকিং সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। 

হোটেল দি কক্স- টুডের ম্যানেজার আবু তালেব জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে হোটেল বুকিংয়ে পর্যটকদের বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের হোটেলও নববর্ষ উপলক্ষে সাজানো হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজারে পর্যটক আগমন থাকতে পারে। 

হোটেল দি গ্র্যান্ড বিচের পরিচালক শাহ নওয়াজ জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে হোটেল। বছরের শেষ দিন উপলক্ষে পর্যটকদের নানা ধরনের সুবিধাও দেয়া হবে। আমাদের হোটেলে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে ৬০ শতাংশ। অন্যান্য হোটেল-মোটেলেও খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য মিলেছে।

তবে তারকা মানের হোটেল গুলোতে বরাবরের মতোই ফুল বুকিংয়ের প্রত্যাশা রয়েছে। সবকটি তারকা হোটেলে থার্টি ফার্স্ট নাইটের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম টিকিটও বিক্রি শুরু করেছে।

একইভাবে তারকামানের হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইস, কক্স টুডে, সায়মন বিচ ও লংবিচেও নানা জমকালো আয়োজন থাকবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও আরো কিছু বড় মানের হোটেলেও নানা অনুষ্ঠান থাকবে।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইভাবে জেলা প্রশাসন বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছেন। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।

কক্সবাজার পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, সরকারিভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে এবারো উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোন আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়নি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান,পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এখন পর্যটন মৌসুম, তাই দেশ বিদেশ থেকে কক্সবাজারে লাখ লাখ মানুষ ছুটে আসছেন। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও  আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য বিশেষ টহল জোরদার করা হয়েছে শহর ও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ সব সময় মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন। 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটন জোন  কক্সবাজার। তাই যেকোনো বিশেষ দিন উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকে। এবারো পর্যটকরা থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিক বৈঠকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুধু থার্টি ফার্স্ট নাইট বা বর্ষবরণ নয়, ভরা পর্যটন মৌসুমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে।

ডিসি জানান, সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh