প্রত্যাশা পূরণ ব্যর্থ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:১৭ পিএম

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ছবি: সংগৃহীত

‘সূর্যোদয় দেখেই সবসময় দিনের  পূর্বাভাস বুঝা যায় না’ প্রবাদটি হুবহু  মিলে যায় বাাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে। ২০২২ সালকে শুধুমাত্র একটি বাক্যে বর্ণনা করা যেতে পারে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মহাকাব্যিক টেস্ট জয় দিয়ে বছর শুরু করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আর ঘরের মাটিতে ভারতের কাছে তিন উইকেটের হৃদয় বিদারক হারের মধ্যে দিয়ে বছর শেষ করে টাইগাররা। যখন বাংলাদেশ আরেকটি ঐতিহাসিক টেস্ট জয় স্বপ্ন দেখছিলো। ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতোমধ্যেই  নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ দল । এ বছর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের মধ্যে দিয়ে নিজেদের অবস্থান  আরও শক্তিশালী করেছে তারা। এ জন্য ২০২২ সালে বাংলাদেশ দলের বড় চ্যালেঞ্জ  ছিল  টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের আরও বেশি শক্তিশালী প্রতিযোগী করে তোলা।

অবশ্য প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ না হলেও, দুই ফরম্যাটেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি ছিলো বাংলাদেশের। বাংলাদেশকে এখন শুধু শিখতে হবে কিভাবে টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচগুলো ভালোভাবে শেষ করতে হয়। যা ওডিআই ফরম্যাটে খুব ভালোভাবে করে থাকে টাইগাররা।

একটি ছোট বক্তব্য দিয়ে বছর নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘ ২০২২ সালটি আমাদের জন্য দুর্দান্ত বছর ছিল বলেই আমি মনে করছি। আমাদের মানসিকতা, বিশেষ করে  আমাদের ঘাটতির জায়গায় আমরা অনেক উন্নতি করেছি। ড্রেসিংরুমে আমাদের আলোচনার বিষয় থাকে, যে ধরনের নেতৃত্ব তৈরি করা হচ্ছে তাতে ২০২৩ সালটি ভিন্ন হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ২০২৩ সালে তিনটি টেস্ট সিরিজ জিততে হবে। ২০২৪ সালের বিশ^কাপে ভাল করতে  আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমাদের একটি টি-টোয়েন্টি দল প্রস্তুত করা  উচিত।  ওয়ানডেতে আমরা একটি দল হিসেবে সেট হয়েছি। ২০১৫ সাল থেকে আমরা ঘরের মাঠে মাত্র একটি সিরিজ হেরেছি। আমরা যদি দল হিসেবে খেলতে পারি, সবাই  নিজের দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করলে  বিশ্বকাপে আমাদের ভালো করা উচিত।’

এক নজরে কিছু  পরিসংখ্যান :

এ বছর ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। মাত্র একটি জিতেছে তারা। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় ঐতিহাসিক অর্জন। এরপর আট ম্যাচে হেরেছে এবং শ্রীলংকার বিপক্ষে ড্র করেছে।

এ বছরে ১৫টি ওয়ানডের মধ্যে ১০টিতে জয় এবং পাঁচটিতে পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ দল।  এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ  জয়। বছরের শেষ ভাগে ঘরের মাঠে ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মত তিন ম্যাচের সিরিজে হারানো। তবে ভালো কিছুর সাথে চোখে পড়ার মত ব্যর্থতাও রয়েছে। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজও হেরেছে টাইগাররা।

২১টি টি-টোয়েন্টি খেলে মাত্র ছয়টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১৪টি ম্যাচে এবং একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। যদিও টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দুর্বল ছিল টাইগারদের। তবে এ বছর নেদারল্যান্ডস এবং জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে হারের বৃত্ত থেকে বের হয়েছে টাইগাররা। ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়

টেস্ট ফরম্যাট যখন  বাংলাদেশকে সকলেই বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলো ঠিক তখনই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আট উইকেটে ঐতিহাসিক  জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। বছরের শুরুতে টেস্ট সিরিজের জন্য যখন নিউজিল্যান্ড সফর করে তখনও কেউ কল্পনা করেনি টেস্ট ম্যাচ জিততে পারে বাংলাদেশ। সেখানে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩১ ম্যাচ খেললেও কোন ম্যাচ জিততে পারেনি টাইগাররা। কিন্তু মাউন্ট মাউঙ্গানুইতে দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের  প্রথম ও  নিজেদের ৩২তম ম্যাচে  নতুন ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশ। হারের বৃত্ত ভেঙে জয়ের ধারায় ফিরে বাংলাদেশ। সেটিও আবার বরাবরের দুর্বল টেস্ট ফরম্যাটে।

ডেভন কনওয়ের ১২২ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৪৫৮ রান করে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান ৭৮, অধিনায়ক মুমিনুল হক ৮৮, লিটন দাস ৮৬ এবং নাজমুল হোসেন শান্ত ৬৪ রান করেন। প্রথম ইনিংস থেকে ১২০ রানের লিড নেয় টাইগাররা। লিডের পরও বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে পারবে সেটি কল্পনাতেও ছিলো না।

পেসার এবাদত হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং স্পেল বাংলাদেশের জয়ের পথ তৈরি করে। ৪৬ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। জয়ের জন্য মাত্র ৪০ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ। মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে  পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছাড়া এমন জয় ছিলো অবিশ্বাস্য।  তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়রা অবিস্মরণীয় জয়ের টেস্টে ছিলেন না। মুশফিকুর রহিম মাত্র ১২ রান করেছিলেন।

কিন্তু টেস্টে গ্রাফটা  একই রয়ে গেছে:

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অবিস্মরণীয় টেস্ট জয়ের পর ভাবা হয়েছিলো টেস্ট ফরম্যাটে শক্তি দল হবে বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ১১৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা। পরবর্তীতে শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ। যদিও বছরের শেষ দিকে ভারতের বিপক্ষে জয়ের কাছে এসেও সেটি হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। তারপরও টেস্টে  দুর্বলতা  রয়েই গেছে টাইগারদের।

টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান মোমিনুল

২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মুমিনুলের অধীনে ১৭ টেস্টে মাত্র তিনটি জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মোমিনুল হকের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য যা যথেষ্টই ছিল। এছাড়া ব্যাট হাতে বাজে পারফরমেন্সের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। তাই টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় বাংলাদেশের সেরা টেস্ট ব্যাটারকে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ হারের পরই এমন সিদ্ধান্ত নেন মোমিনুল। ঐ সিরিজে অন্তত একটি টেস্ট জয়ের লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশের। চাপের মধ্যে ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে দলের নেতৃত্ব নেন মোমিনুল। অধিনায়কত্ব ছাড়ার আগে এ বছর মাত্র একটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ছয় ম্যাচে মাত্র ১৬২ রান করেন তিনি। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ইনিংসে মাত্র ১১ রান করেন মোমিনুল। দুই টেস্টের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল লংকানরা।

মোমিনুল বলেছিলেন, ‘নিজে যখন রান করতে পারিনা, দল জিততে পারেনা  তখন দলের অধিনায়কত্ব করা কঠিন হয়ে যায় বলে আমি বিশ্বাস করি । আমি মনে করি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়াই ভালো।’

টেস্ট অধিনায়কত্ব পান সাকিব

মুমিনুলের পদত্যাগে টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পান সাকিব আল হাসান। মুমিনুলকে সরিয়ে সাকিবকে অধিনায়ক করা উচিত কি-না তা নিয়ে বোর্ডে আলোচনা হয়েছিল। তবে সাকিব স্পষ্টভাবে জানান, মুমিনুলকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলে অধিনায়ক হবেন না তিনি। মোমিনুল স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ায় টেস্ট অধিনায়কত্ব নেন সাকিব। এর আগে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা হয় সাকিবকে।ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আইসিসিকে না জানানোয় সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ায় তার কাছ থেকে  ২০১৯ সালে  অধিনায়কত্ব পান মুমিনুল।

তামিম, মুশফিকের অবসর; টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ মাহমুদুল্লাহ; টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম অবসর নেন। বিশ্বের অন্যান্য দলের ন্যায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট একটি তরুণ দল তৈরি করার চেষ্টা করেছিল । মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এই ফরম্যাট থেকে বাদ দেয়া হয়। সিনিয়রদের মধ্যে শুধুমাত্র সাকিব আল হাসান দলে জায়গা ধরে রাখেন। টি-টোয়েন্টি দলকে গড়ে তোলার জন্য অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেয়ার পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেন তামিম।

এমএস ধোনির স্টাইলে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে একটি ছোট বার্তায় তামিম লিখেন, ‘আজ থেকে আন্তর্জাতিক  টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে  আমাকে সাবেক হিসেবে  বিবেচনা করুন। সবাইকে ধন্যবাদ।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে অনুষ্ঠিত  এশিয়া কাপের পর সংক্ষিপ্ত ভার্সন থেকে অবসর নেন মুশফিকুর রহিম। কেননা যেমন ছিল তার খারাপ পারফরমেন্স তেমনি ভাগ্যও  ছিলনা তার সহায়। মুশফিকের  পাশাপাশি মাহমুদুল্লাহর  পারফরমেন্সও ছিলো হতাশাজনক।

কিন্তু মুশফিক নিজের সময় শেষ হওয় যাওয়ার কথা বুঝতে পেরে অবসর ঘোষণা করলেও  দুঃখজনকভাবে মাহমুদুল্লাহ তা করেননি এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়তে হয় তাকে। টিম ম্যানেজমেন্ট স্পষ্ট করেই  জানিয়ে দেন- দলে আর ফেরার সুযোগ নেই  মাহমুদুল্লাহর।

বাংলাদেশের জন্য চিন্তার জায়গা

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য এতটাই যে, এই ফরম্যাটে যেকোনো দলকে হারানোর মত দলে পরিণত হয়েছে । এরমধ্যে জ্বলন্ত উদাহরণ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়। কেননা  দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাজে ভাবে হেরেছে ভারত। ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারের পর কোন ওয়ানডে সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ।

কিন্তু জিম্বাবুয়ের কাছে   সিরিজ হেরে  থমকে যায় ওয়ানডে ক্রিকেটে দুর্দান্ত সব সাফল্যে আকাশে উড়তে থাকা বাংলাদেশ। সিকান্দার রাজার দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরমেন্সে জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। পাশাপাশি একই ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে তারা।

নারী ক্রিকেটারদের জন্য মিশ্র বছর

বছরটি নারী ক্রিকেটারদের জন্য অম্লমধুর। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। যে কারণেই অনেকেই ধারনা করছিলো  তাদের উন্নতি হবে। তবে পুরুষ দলের মতো তারা পারেনি। তবে কিছু সাফল্যও ছিল নারীদের। ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত খেলতে নেমে  পাকিস্তানের বিপক্ষে  ৯ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়ও পায় নারী দল।  তবে বিশ্বকাপে পরের সব ম্যাচেই হারে তারা। এ বছর ১০টি ওয়ানডে খেলে সাতটিতে হার ও একটিতে জিতেছে । দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রেকর্ড ভালো গেছে. ১৭ ম্যাচে ১০টি জয় পায়। কিন্তু বছরের শেষ দিকে, নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ৩২ রানে অলআউট হয় নারীরা। সিরিজের পরের দুই ওয়ানডেও হারে দলটি। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি । স্বাগতিক হওয়া সত্ত্বেও  বছর টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় বাংলাদেশ নারী দল।

বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিটন দাস

ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে পুরো বছরই দারুণ ছন্দে ছিলেন লিটন দাস। তার কোন প্রতিন্দ্বন্দিই ছিলো না। ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী লিটন। যা দেশের এক নম্বর ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাকে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের যুগ শেষ হবার সাথে সাথে, দুর্দান্ত পারফরমেন্সে নিজেকে পরবর্তী নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন লিটন। বছরের শেষের দিকে আইসিসি টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে ১২ তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। যা এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি ব্যাটারের সেরা র‌্যাংকিং। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে শীর্ষ ১০-এ জায়গা করে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে লিটন। এ বছর তিনটি ফরম্যাটে ১৯২১ রান করেছেন তিনি। যা বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে যে কোন বর্ষপঞ্জিতে  সর্বোচ্চ এবং ২০২২ সালে বাবর আজমের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে (৫৭৭), টি-টোয়েন্টিতে (৫৪৪) ও টেস্ট (৮০০) অর্থাৎ তিন ফর্মেটেই  সর্বোচ্চ  রান করেছেন লিটন। প্রতিটি পঞ্চাশোর্ধ  ইনিংসও তার ।

বাংলাদেশী  খেলোয়াড়দের  টেস্ট  পরিসংখ্যান :

সর্বোচ্চ রান- লিটন দাস (৮০০)

সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর- মুশফিকুর রহিম (১৭৫) শ্রীলংকার বিপক্ষে

সর্বাধিক চার- লিটন দাস (৯৮)

সর্বাধিক ছক্কা-সাকিব আল হাসান (৮)

সর্বোচ্চ গড়- জাকির হাসান (৪৬.৫০)

সর্বোচ্চ গড়- (সর্বনিম্ন ১০ ইনিংস)- লিটন দাস (৪৪.৪৪)

সর্বাধিক হাফ সেঞ্চুরি - লিটন দাস (৫)

সর্বাধিক সেঞ্চুরি - লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম (২)

সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট (ন্যূনতম ১০ ইনিংস)-নুরুল হাসান সোহান (৬৫.৮৩)

সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট-শরিফুল ইসলাম (৭৭.৫৫)

সর্বোচ্চ বল মোকাবেলা  - লিটন দাস (১৩৮৭)

সর্বাধিক মিনিট ব্যাট করেছেন- লিটন দাস (২০৩৫)

সর্বাধিক শূন্য- খালেদ আহমেদ (৮)

সবচেয়ে বেশি ইনিংসে  ব্যাটিং করেছেন- নাজমুল হোসেন শান্ত (১৯)

সর্বাধিক উইকেট- মেহেদি হাসান মিরাজ (৩১)

সেরা বোলিং ফিগার- নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবাদত হোসেন (৬-৪৬)

সর্বাধিক ৪+ উইকেট- তাইজুল ইসলাম (৪)

সর্বাধিক ৫ উইকেট- সাকিব আল হাসান, তাইজুল, এবাদত (১)

সেরা বোলিং গড় (কমপক্ষে ৫০ ওভার)- সাকিব আল হাসান (২৯.৫৬)

সেরা বোলিং গড়- মোমিনুল হক (২৩.৬৬)

সেরা স্ট্রাইক রেট (কমপক্ষে ৫০ ওভার)- নাঈম হাসান (৫৩.০০)

সেরা ইকোনমি রেট (কমপক্ষে  ৫০ ওভার)-সাকিব আল হাসান (২.৪৬)

সর্বাধিক মেডেন - মেহেদি হাসান মিরাজ (৬৬)

ওয়ানডে ক্রিকেটে পরিসংখ্যান

সর্বোচ্চ রান- লিটন দাস (৫৭৭)

সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর- আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিটন দাস (১৩৬)

সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় - মেহেদি হাসান মিরাজ (৬৬.০০)

সর্বাধিক ৫০- লিটন দাস (৪)

সর্বাধিক ১০০- লিটন দাস (১)

সর্বাধিক ছক্কা- মেহেদি হাসান মিরাজ (১০)

সর্বাধিক চার- লিটন দাস (৬৭)

সর্বাধিক শূন্য- নাজমুল হোসেন শান্ত (২)

সবচেয়ে বেশি মিনিট ব্যাটিং করেছেন- লিটন দাস (১০৪৮)

সর্বাধিক বল মোকাবেলা করেছেন- লিটন দাস (৬৯৪)

সর্বাধিক উইকেট- মেহেদি হাসান মিরাজ (২৪)

সেরা বোলিং ফিগার- ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাইজুল ইসলাম (৫-২৮)

সেরা বোলিং গড়- তাইজুল ইসলাম (১৩.৭৫)

সর্বাধিক মেডেন - নাসুম আহমেদ (৮)

সেরা ইকোনমি রেট (কমপক্ষে ২০ ওভার)- নাসুম আহমেদ (৩.৩৯)

সেরা স্ট্রাইক রেট (কমপক্ষে ২০ ওভার)- এবাদত হোসেন (১৯.২০)

টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান

সর্বোচ্চ রান- লিটন দাস (৫৪৪)

সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর - সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে আফিফ হোসেন (৭৭*)

সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়- নাজমুল হোসেন শান্ত (৩০.৮০)

সর্বোচ্চ ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট (কমপক্ষে ৫ ইনিংস)- লিটন দাস (১৪০.২০)

সর্বাধিক ৫০+ স্কোর - লিটন দাস (৪)

সর্বাধিক চার- লিটন দাস (৫৭)

সর্বাধিক ছক্কা-লিটন দাস (১৬)

সর্বাধিক উইকেট- মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১৩)

সেরা বোলিং ফিগার- জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৫-২০)

সেরা বোলিং গড় (কমপক্ষে  ১৫ ওভার)-মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১৮.৩০)

সর্বোচ্চ বোলিং স্ট্রাইক (কমপক্ষে  ১৫ ওভার)- এবাদত হোসেন (১৩.০০)

সেরা বোলিং ইকোনমি (কমপক্ষে  ১৫ ওভার)- মাহেদি হাসান (৬.৪২)

সর্বাধিক ম্যাচ সেরা - তাসকিন আহমেদ (২)

সূত্র: বাসস

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh