অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৩৬ এএম | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৩৭ এএম
প্রতীকী ছবি
অনেক মুসল্লিই জুমার দিন ফরজ দুই রাকাত নামাজ পড়ে তাড়াহুড়ো করে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। আবার অনেকে জুমার দিন জোহরের ওয়াক্তের পর অনেক বেশি নফল নামাজ আদায় করেন। নফল নামাজের আদায়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং বাধা ধরা নিয়মও নেই। যার যতো ইচ্ছে সে ততো দুই রাকাত করে ততো নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে জুমার নামাজের ক্ষেত্রে দুই রাকাত ফরযের আগে ও পরে চার রাকাত করে সুন্নাত নামাজ পড়া বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন অনেক উলামা একরাম।
জুমা নামাজ উপলক্ষে প্রতি সপ্তাহে অনন্ত একবার মুসল্লিরা নিকটবর্তী মসজিদে একত্রিত হন, সম্মিলিত হন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাতারবন্দী হয়ে নামাজ আদায় করেন। নামাজের আগে নসিহতমূলক খুতবা শোনে। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দার বিগত এক সপ্তাহের গুনাহসহ অতিরিক্ত আরো তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
জুমার নামাজ রাকাতের সংখ্যা ও এ নামাজ পড়ার নিয়মই নিম্নে তুলে ধরা হলো-
জুমার রাকাত সংখ্যা
ইসলামি শরিয়তের বিধান অনুযায়ী জুমার দিন দুই রাকাত নামাজ পড়া ফরজ। এ নিয়ে কারো কোনো মতপার্থক্য নেই। তবে ফরজের আগে চার রাকাত ও ফরজের পরে চার রাকাত সুন্নাতও রয়েছে। ফলে অধিকাংশ মুসল্লি সব মিলিয়ে মোট ১০ রাকাত জুমার নামাজ আদায় করে থাকেন। অনেকে আবার জুমার আগে দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়ে থাকে। সুন্নাত নিয়ে মত পার্থক্য থাকলেও জুমার ফরজ নামাজ দুই রাকাত এ নিয়ে কারো কোনো মতপার্থক্য নেই।
জোহরের নামাজেরর পরিবর্তে এই নামাজ ফরজ হিসেবে পড়তে হয়। সময় এক হলেও জোহরের সাথে জুমার নামাজেরর নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজেরর পরিবর্তে এই নামাজ ফরজরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে ‘জুমার নামাজ’ বলা হয়।
জুমার নামাজেরর গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ - فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ ابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰهِ وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজেরর আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে তাড়াতাড়ি করো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। এরপর নামাজ সম্পন্ন হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমুআ : আয়াত ৯-১০)
জোহরের সাথে জুমার নামাজেরর পার্থক্য
জুমার নামাজ জোহরের সময় পড়লেও জোহরের সাথে জুমার নামাজেরর নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। তাহলো-
১. জুমার নামাজ দুই রাকাত ফরজ আর জোহরের নামাজ চার রাকাত ফরজ রয়েছে।
২. জুমার ফরজ নামাজেরর আগে ২/৪ রাকাত দুখুলিল মসজিদ/কাবলাল জুমা এবং পরে ৪ রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নাত নামাজ) আদায় করতে হয়। আর জোহরের নামাজেরর আগে ৪ রাকাত সুন্নাতে মোয়াক্কাদা পড়তে হয়।
৩. জুমার নামাজেরর আগে ইমামের খুতবা শুনতে হয়। খুতবা শোনা আবশ্যক। জোহর নামাজেরর জন্য কোনো খুতবা শুনতে হয় না।
৪. এছাড়াও জুমার দিন অনেক নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, তাওবা-ইসতেগফার ও দরূদ পড়ার বিশেষ ফজিলত নির্ধারিত আছে। যা অন্যান্য দিন জোহরের সময় নেই। তবে এসব নফল নামাজ জুমার অংশ হিসেবে পড়া হয় না এবং তা আবশ্যকীয়ও নয় বরং ব্যক্তি তা স্বেচ্ছায় এসব আমল-ইবাদত করতে পারে এবং না করলে তার দোষ হয় না।