আওয়ামী লীগ নেতাকে তুলে নিয়ে পেটালেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফাকে (৫৮) তুলে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমনের বিরুদ্ধে।  

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বাজারে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন সুমনের ব্যক্তিগত অফিসে এই ঘটনা ঘটে।  

খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মীর হোসাইন বলেন, চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম কম্বল বিতরণের জন্য খিলপাড়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদককে তথ্য সংগ্রহ করে স্লিপ করতে বলেন। আগামী সোমবার (২ জানুয়ারি) এসব কম্বল বিতরণ করা হবে। ভুক্তভোগী দলীয় নেতাকর্মীর মাঝে এই সব কম্বল বিতরণের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে স্লিপ তৈরি করছিলেন। এই নিয়ে খিলপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমন ক্ষুব্ধ হয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফাকে প্রশ্ন করেন তাকে না জানিয়ে কেন কম্বলের স্লিপ তৈরি করা হচ্ছে। তখন তিনি বলেন, তুমি বর্তমানে দলের কোনো দায়িত্বে নেই। তোমাকে কেন জিজ্ঞেস করব। এরপর কম্বলের স্লিপ নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার খিলপাড়া বাজার থেকে সুমন তার দুই অনুসারী দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে বাজার থেকে নিজের ব্যক্তিগত অফিসে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে সুমন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে সুমন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে চড়, থাপ্পড় দিয়ে বুকে লাথি মারেন এবং বেধড়ক মারধর করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আজ শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। 

তিনি আরো বলেন, তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছেন। এই ঘটনার উপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগেও অভিযুক্ত বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার  খিলপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।   

চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমনসহ কয়েকজন অন্যায়ভাবে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে মারধর করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুমন বর্তমানে কোন দলীয় দায়িত্বে নেই। ১০ থেকে ১২ বছর আগে খিলপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন।

চাটখিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু জাফর বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।