গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:১৯ পিএম
মাহমুদা প্রতিবন্ধী স্কুলের পরিচালক ও শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রতিনিধি
নিজের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ের স্কুলের ব্যয় বহন করতে না পেরে নিজেই গড়ে তুলেছেন একটি প্রতিবন্ধী স্কুল। এ কাজের জন্য এখন প্রশংসা পাচ্ছেন স্থানীয়দের। অনেকে সহায়তার হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন। বলছিলাম, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর এলাকার কবীর হোসেনের স্ত্রী শামছুন নাহারের কথা।
২০০৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন মাহমুদা। তার এক ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে মাহমুদা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়েই জন্ম নেন। ২০১৪ সালে সাভারের সিআরপিতে ভর্তি করেন চিকিৎসা ও লেখা পড়ার জন্য। কিন্তু সিআরপিতে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা খরচ, যা তার পক্ষে চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর পর সামছুন নাহার নিজেই একটি প্রতিবন্ধী স্কুল খুলে এলাকার প্রতিবন্ধী শিশুদের থেরাপি ও লেখাপড়ার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকেই গাজীপুরের দক্ষিণ কালামপুর গ্রামে মাহমুদা প্রতিবন্ধী স্কুল স্থাপন করেন। খবর পেয়ে এলাকার শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর অভিভাবকরা তার এ প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের ভর্তি করেন।
বর্তমানে এ প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালকসহ চারজন শিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে পরিচালক সামছুন নাহার, স্বর্ণামণি আক্তার, ইয়াসমিন আক্তার ও লাইজু বেগম। এ ছাড়া আকবর আলী নামে একজন দপ্তরি রয়েছেন।
মাহমুদা প্রতিবন্ধী স্কুলের পরিচালক সামছুন নাহার জানান, তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে এলাকার কোনো স্কুলে ভর্তি করাতে না পারার বেদনা থেকে এ স্কুল গড়ে তুলেছেন। প্রথমে পাঁচজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটি চালু করা হয়। বর্তমানে ৬৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন দিতে না পারায় স্কুলটি বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। নিজের বাড়ির বাসা ভাড়া থেকে শিক্ষকদের বহু কষ্টে বেতন দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করানো হচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও শিক্ষক নিয়োগ ও ভালোভাবে চালাতে পারবেন বলে জানান তিনি।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম ইবনে সাজ্জাদ বলেন, স্কুলটি পরিদর্শনের পর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে আরও সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তারা আবেদন করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।