পুঠিয়ায় ফসলের ক্ষেতে হচ্ছে পুকুর, দেখছে না প্রশাসন

পুঠিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:২৯ পিএম

ফসলের ক্ষেতে রাতের আঁধারে পুকুর খনন চলছে। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি

ফসলের ক্ষেতে রাতের আঁধারে পুকুর খনন চলছে। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি

রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে পুকুর খনন চলছে। আর খননকৃত পুকুরের মাটি বহণকারী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের সাথে বিশেষ সমঝোতায় এসব হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর খনন করতে জমির মালিকরা ক্ষমতাসীন দলের সাবেক একজন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতার সাথে চুক্তি করছেন। আর ওই দুই নেতা পুলিশ প্রশাসনের সাথে সমঝোতা করে পুকুর খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয়দের তথ্য মতে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের গাইনপাড়ায় একই স্থানে ৬টি ও কার্তিকপাড়ার কাছে পুঠিয়া ও দুর্গাপুর উপজেলা সীমান্তে দুটি পুকুর খনন কাজ চলছে। আর পুকুরগুলো খনন করছেন ফারুক হোসেন নামের একজন ঠিকাদার।

জিউপাড়া এলাকার চাষি শাহাবাজ উদ্দীন বলেন, কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি গাইনপাড়ায় গ্রামে একই স্থানে প্রায় ৮০ বিঘা ফসলি জমিতে ৬টি পুকুর খনন করছে। আর পুকুর খননের মাটিগুলো ১২/১৪ টি ট্রাক্টর বহণ করছে। আর ট্রাক্টরগুলো মাত্রাতিরিক্ত মাটি বহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি। তবে রহস্যজনক কারণে কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।

তাহের আলী নামের অপর একজন চাষি বলেন, পুকুর খনন রোধে স্থানীয় লোকজন গত ৩ জানুয়ারি থানায় অবহিত করেন। পরে সেখানে কয়েকজন পুলিশ গিয়ে খননকারী ঠিকাদারকে ধরে আনেন। কিন্তু পথে সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিবুর রহমান মিঠু পুঠিয়া শ্রমিক ইউনিয়নের সামনে পুলিশের সাথে চুক্তি করে ওই ঠিকাদারকে ছাড়িয়ে নেন। এরপর প্রতিরাতেই চলছে পুকুর খনন কাজ।

পুকুর খননকারী ঠিকাদার ফারুক হোসেন বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সাথে চুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি পুকুর খনন করা হয়। আর যারা চুক্তিতে যায় না তাদের জেল-জরিমানা গুনতে হয়।


এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিবুর রহমান মিঠু বলেন, আমি কোনো পুকুর খননের সাথে জড়িত না। শুনেছি একটি স্থানে পুরনো পুকুর খনন হচ্ছে।

অপরদিকে সাবেক রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ বলেন, শুনেছি ফারুক নামের একটি ছেলে পুকুর খনন করছে। আমাকে জড়িয়ে একটি চক্র মিথ্যা প্রচারণা করছে। আমি এসকল বিষয়ে কিছুই জানি না।

তবে বিশেষ সসমঝোতার বিষয়টি অস্বীকার করে থানার ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, গত দুইদিন আগে পুলিশ একটি পুকুর খনন বন্ধ করতে গিয়েছিল। পরে তাদের খননের অনুমোদন থাকায় ফিরে এসেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ বলেন, পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছেন। যেখানে ফসলি জমিতে পুকুর খনন হবে সেখানেই জেল জরিমানা দেয়া হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh