কাপ্তাই লেকে মাছের উৎপাদন কমায় লোকসানে মৎস্যজীবীরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৫ পিএম

কাপ্তাই লেক। ছবি: প্রতিনিধি

কাপ্তাই লেক। ছবি: প্রতিনিধি

বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কাপ্তাই লেকের পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে মৎস্য আহরণ কমে গেছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শুকিয়ে গেছে লেকের অধিকাংশ জলাভূমি।

বিগত বছরের তুলনায় মৎস্য আহরণ না হওয়ায় লোকসান গুনছে মৎস্য আহরণের উপর নির্ভরশীল জেলে ও ব্যবসায়ীরা। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ড্রেজিং করে লেকের নাব্যতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

মহালছড়ি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে কাপ্তাই লেকে মৎস্য আহরণের জেলের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। বছরের ৯ মাস এখানে মাছ শিকার করে মৎস্যজীবীরা। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মাছ পাঠানো হয়। তবে চলতি বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। শুকিয়ে গেছে কাপ্তাই লেকে একটি বড় অংশ। পানি কম থাকায় কমে গেছে মৎস্য আহরণ। মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ টন মৎস্য আহরণ হলেও এখন হচ্ছে মাত্র ১-২ টন। এতে বিপাকে পড়েছে মৎস্যজীবীরা। 

কাপ্তাই লেকের উপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবী লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ বকুল মিয়া, আবু সাঈদ জানান, পানি কমে যাওয়ায় জালে কোনো মাছ পড়ছে না। অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রচুর মাছ ধরা পড়ত। এখন কোনো পানিই নেই । মাছ না পাওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রইস উদ্দিন জানান, মহালছড়িতে পানির কারণে মাছ ধরতে খুব একটা সুবিধা হয়নি। গত বছর মোটামুটি চললেও এ বছর লেকে মাছই নেই। তবে আমাদের একটি দাবি হলো- নদী থেকে মাটি তুলতে হবে। এতে নদীর পানির পরিমাণ বাড়বে। আমরা মাছও পাব।

মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাছ পাঠাই। তবে এ বছর পানি না থাকায় মাছ কম ধরা পড়েছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাপ্তাই লেকের নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য ড্রেজিং জরুরি। ড্রেজিং হলে লেকের গভীরতা বাড়বে। মাছও বেশি ধরা পড়বে।

মৎস্য আহরণ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে রাজস্ব ঘাটতি। এতে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের নেওয়া কাপ্তাই লেকে ড্রেজিং প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে মাছের উৎপাদন কমে যাবে বলে জানিয়েছে মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসরুল্লাহ আহমেদ।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কয়েক বছর ধরে বৃষ্টিপাত কমে গেছে। মৎস্য আহরণ বৃদ্ধির বাড়াতে হলে কাপ্তাই লেক ড্রেজিংয়ের যে প্রকল্প সরকার নিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে মহালছড়ি মৎস্য আহরণ উপকেন্দ্রে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৬৬ লাখ টাকা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh