প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৩ এএম
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভেঙে পড়া মঞ্চ। ছবি: ঢাবি প্রতিনিধি
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মঞ্চ ভেঙে পড়ার ঘটনায় বিল নিয়ে শঙ্কিত ডেকোরেটর মালিক। অন্যদিকে বিষয়টি তদন্ত করছে না সরকারের কোনো সংস্থা। সংগঠনের নিজস্ব উদ্যোগেও গঠন করা হয়নি কোনো তদন্ত কমিটি। ফলে কোনো তদন্ত ছাড়াই চাপা পড়ে যাচ্ছে আলোচিত ঘটনাটি।
ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ৬ জানুয়ারি শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মঞ্চ তৈরি করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ মঞ্চটি ভেঙে পড়ে। এতে অন্তত ৮ জন আহত হন।
একজন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঘটনা ঘটলেও এ নিয়ে কোনো তৎপরতা নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
সরকারের কোনো সংস্থাই মঞ্চ ভেঙে পড়ার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত করছে না বলে জানা গেছে। শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, এটা দলীয় ব্যাপার। আমরা কোনো তদন্ত করছি না।
অন্যদিকে ঘটনার পর কারণ খুঁজে দেখা হবে বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি ছাত্রলীগ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এখন পর্যন্ত ইচ্ছাকৃত কোনো অন্যায়ের প্রমাণ পাইনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তদন্ত করেছে। তারাও ইচ্ছাকৃত ত্রুটি পায়নি। এটি নিছক দুর্ঘটনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরির দায়িত্ব ছিল অপূর্ব ডেকোরেটর নামে একটি প্রতিষ্ঠানের। কয়েকদিন সময় দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ৩৬ ফুট প্রস্থ ও ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ মঞ্চ। ধারণক্ষমতা ছিল ১০০ মানুষের।
ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের দাবি, তাদের ১০০ জন ধারণক্ষমতার মঞ্চ তৈরির দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। চাহিদা অনুযায়ী মঞ্চ তৈরি করেছিলেন তারা; কিন্তু ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে আসার সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চে ভিড় বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত নেতাকর্মীর ভিড়ে মঞ্চ ভেঙে যায়।
জানা যায়, মঞ্চ তৈরিতে প্রায় ৬৯ হাজার টাকার বিল এলেও অনুষ্ঠান শুরুর আগে ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দেয় ছাত্রলীগ। বাকি টাকা ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠান পাবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত।
অপূর্ব ডেকোরেটরের মালিক ইদ্রিস চাকলাদার বলেন, কাজ শুরুর আগে খরচের জন্য ছাত্রলীগ কিছু টাকা দেয়। পরে টাকা-পয়সা জোগাড় করে আমাকে ডাকলে আমি গিয়ে নিয়ে আসি। বাকি টাকা দেয় কিনা কেমনে বলব।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। কিছু টাকা এখনো বাকি রয়েছে। আমরা ডেকোরেটর মালিকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমাধান করব।