জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৫৪ পিএম
কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে এক শিশুকে। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ২২ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম ধাপে সারাদেশের ৪৪টি জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে উদযাপন করা হবে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ। এ কর্মসূচির আওতায় প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ শিশুকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
নাজমুল ইসলাম জানান, ‘২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কৃমি নির্মূলের লক্ষ্যে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম ধাপে ৪৪টি জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী সকল শিশুকে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী সকল শিশুকে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ (মেবেন্ডাজল বা ভারমক্স ৫০০ মি.গ্রা.) ভরা পেটে সেবন করানো হবে। প্রথম ধাপে ঔষধ সেবনকারী শিশুর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৬০ লক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম উদযাপন করার লক্ষ্য হচ্ছে স্কুলগামী, স্কুল বহির্ভূত, স্কুল থেকে ঝরে পড়া, পথ শিশু, কর্মজীবী শিশুসহ সকল শিশুকে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ বিনামূল্যে সেবন করানো। একইসঙ্গে কৃমির পুণঃসংক্রমণ রোধকল্পে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। এসব শিশুদেরকে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়ার ফলে তা অভ্যাসে পরিণত হবে এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যাপারে সচেতন হবে। যা থেকে ভবিষ্যতে শিশুরা কৃমি সহ অন্যান্য পরজীবী বাহিত রোগব্যাধি থেকেও পরিত্রাণ পাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্য মতে, কৃমির সংক্রমণ বয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। শূন্য থেকে ৪ বছর বয়সীদের সাত শতাংশ, ৫-১৪ বছর ৩২ শতাংশ, ১৫-২৪ বছর ১৫ শতাংশ, ২৫-৪৪ বছর ৭ শতাংশ, ৪৫-৫৪ বছর ৫ শতাংশ এবং ৫৫ বছরের অধিক বয়সী মানুষের মধ্যে চার শতাংশ। এই জরিপের উপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদের মাঝে এই কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে।’
নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কর্মসূচিটি ২০০৫ সালে প্রথম বারের মতো ৩ জেলায় নেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে জুন ২০০৭ পর্যন্ত ১৬ জেলায়, মে ২০০৮ পর্যন্ত ২৪ জেলায় ও নভেম্বর ২০০৮ থেকে ৬৪টি জেলায় কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমটি সম্প্রসারিত করা হয়। শুরুতে এই কর্মসূচীটি শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬-১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে সীমিত রেখে চালু করা হয়। পরবর্তীতে লক্ষ্য করা যায়, ৫ বছর বয়সী অনেক শিশুই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে যায় আর তাই ২০১০ সাল থেকে উক্ত কর্মসূচীতে ৫ বছর বয়সী শিশুদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’