বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৩৪ পিএম
মায়ের সাথে চুরি হওয়া উদ্ধারকৃত নবজাতক। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত শাহিনুর নামে এক নারীকে নগরীর আমানতগঞ্জ পানির ট্যাংক এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করেছেন তারা। পরে নবজাতককে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নগরীর কাউনিয়া বিসিক সড়ক এলাকার বাসিন্দা ও বিসিকের শাওন পাইপ কারখানার শ্রমিক হেলাল জানান, প্রসব বেদনা শুরু হলে গত ১৬ জানুয়ারি তার স্ত্রী কাকলি বেগমকে শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করান।
এর পর ১৭ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কাকলি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।
তিনি বলেন, ১৮ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় স্ত্রী ও সন্তানকে প্রসূতি ওয়ার্ডে রেখে আমি বাসায় চলে যাই। তখন নবজাতক সন্তান নিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন স্ত্রী কাকলি। এসময় তার সাথে ছিলেন আমার বোন রুনু বেগম।
নবজাতকের মা কাকলি বেগম বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিশু সন্তানকে বিছানায় ঘুমপাড়িয়ে রেখে ননদ রুনু বেগমকে নিয়ে হাসপাতালের মধ্যেই টয়লেটে যাই। ফিরে এসে দেখতে পাই আমার ছেলে বিছানায় নেই। এসময় চিৎকার দিলে অন্যরা এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেয়।
শিশুটিকে উদ্ধার কাজে সহায়তা করা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সচিব মো. শাহাদাৎ হোসেন মাসুম বলেন, আমি বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। বাসার গলির ভেতরে প্রবেশ করতেই এন মহিলাকে ওড়না দিয়ে তড়িঘড়ি করে কিছু ঢাকার চেষ্টা করতে দেখি।
তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। এজন্য আমি ওই মহিলার কাছে জানতে চাইলে ওড়নার ভেতর থেকে শিশুটি কান্নার শব্দ পাই। শিশুটি কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে বাচ্চাটি নিজের বলে দাবি করেন ওই নারী।
মাসুম বলেন, ওই নারীকে কিছু প্রশ্ন করা হলে তিনি এলোমেলো উত্তর দিতে শুরু করেন। এক পর্যায় সে স্বীকার করেন যে বাচ্চাটি হাসপাতাল থেকে কেউ একজন তাকে দিয়েছে। এ কথা শোনার পর পরই আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হয়। তখন ওই নারী বাচ্চাটিকে রেখে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে সবাই তাকে ধরে ফেলে এবং ৯৯৯ নম্বরে কল করলে তাৎক্ষণিক আমানতগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ এসে শিশুটিসহ ওই নারীকে হেফাজতে নেয়।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আজিমুল করিম বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এমনকি চুরি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই নবজাতককে নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকা থেকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত শাহিনুর নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। যেহেতু তার কাছ থেকেই বাচ্চাটি উদ্ধার করা হয়েছে সেহেতু তিনি চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আলী আশরাফ ভূঁইয়া জানান, অসত উদ্দেশ্যে শিশুটিকে চুরি করা হতে পারে। এই ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।