বিসিএস পরীক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসুক

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫৯ এএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়প্রীতি বা জেলাপ্রীতি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) সিদ্ধান্ত, মৌখিক পরীক্ষার পরীক্ষকরা (ভাইভা বোর্ড) চাকরিপ্রার্থীর কাছে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জানতে চাইতে পারবেন না। এমনকি জেলার নামও না। বিসিএস পরীক্ষার পদ্ধতিতে কোটা তুলে দিয়ে মেধাভিত্তিক নিয়োগের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বড় ধরনের সংস্কার।

তবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ অনেক পুরনো। দেশের সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ পদ শূন্য। অথচ দেখা যায়, বিসিএস পরীক্ষার পর ফলাফল পেতেই চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে গেছে। 

সাম্প্রতিক দেশকালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫১টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে (৯ম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব) ৫৫ হাজার ৩৮৯টি। পিএসসি এক একটি বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন সম্পন্ন করতে ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত লাগিয়ে ফেলে; যে কারণে দেশে লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার থাকলেও অসংখ্য সরকারি পদ শূন্যই থেকে যাচ্ছে। 

৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে। ফল প্রকাশ হয় ২০২১ সালের আগস্টে। আর নিয়োগ পেতে পেতে চলে যায় আরও অনেকটা সময়। এভাবেই এক একটি বিসিএস পরীক্ষায় ঝুলে আছে অনেক মেধাবীর জীবন। 

তবে সম্প্রতি বিসিএস পরীক্ষার পদ্ধতিতে বড় ধরনের সংস্কার আনা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে নিয়োগের সুপারিশ পর্যন্ত সব কাজ এক বছরেই শেষ করার কথা বলা হচ্ছে। লিখিত, মৌখিক বা প্রিলিমিনারিতেও সংস্কার আসছে। এ বিষয়ে এক সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু এই সংস্কারই যথেষ্ট না। 

সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে থাকেন বিসিএস ক্যাডার অফিসাররাই। ফলে সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা অনেকাংশেই এই ক্যাডার অফিসারদের ওপরই নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টি মাথায় রেখেই সেকেলে পরীক্ষাপদ্ধতি থেকে বেরিয়ে পিএসসির উচিত বিসিএসের সিলেবাসের আধুনিকায়ন ও পরীক্ষাপদ্ধতির আমূল সংস্কার। 

তবে পিএসসির সব উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় মৌখিক পরীক্ষার নম্বরে। রহস্যজনক কারণে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ১০০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ করা হয়েছে। এতে নানা অনিয়মের দুয়ার খুলছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ রয়েছে। কাজেই মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমাতে হবে। বিষয়টি যদিও সরকারের ওপর নির্ভর করে, তবে এ বিষয়ে পিএসসিকে সদিচ্ছা নিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। 

একটি দেশোপযোগী প্রশাসন গড়ে তুলতে যোগ্য আমলার বিকল্প নেই বলেই আমলা নির্বাচনী পরীক্ষায় আধুনিকায়ন নিয়েও প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। দেশে এখন শিক্ষিতের হার বেড়েছে, শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে সে কারণে বিসিএসের আওতাও বাড়তে পারে। দেশের জনকল্যাণ চিন্তা থেকে বিসিএস পরীক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে- সে প্রত্যাশাই জনগণের।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh