নেই দেশীয় তারকাদের পদচারণা

এন ইসলাম

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৩৫ পিএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৪৩ পিএম

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ব্যানার। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ব্যানার। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ স্লোগানে দেশের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসব ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। গেল ১৪ জানুয়ারি এর পর্দা উঠেছে। জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে বিকেল ৪টায় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। উৎসবের পর্দা নামবে ২২ জানুয়ারি।

৯ দিনব্যাপী উৎসবের ২১তম এই আসরে এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, শিশুতোষ চলচ্চিত্র, স্পিরিচুয়াল, উইমেন্স ফিল্মমেকার, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র বিভাগে ৭১টি দেশের ২৫২টি সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। এর মধ্যে দেশীয় সিনেমা থেকে থাকছে ‘হাওয়া’, ‘বিউটি সার্কাস, ‘দামাল’, ‘সাঁতাও’, ‘পাপ পুণ্য’, ‘দেশান্তর’, ‘ওরা ৭ জন’ ইত্যাদি।

প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আসছে ‘অপরাজিত’, ‘অভিযান’, ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’, ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘ঝরা পালক’, সাই পল্লবি অভিনীত ‘গার্গি’ ও ‘মহানন্দা’র মতো সিনেমাগুলো। এ বছর রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগে দেখানো হচ্ছে বিশ্ব চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা ফ্রাঁসোয়া ত্রুফোর ৪টি চলচ্চিত্র। এগুলো হচ্ছে ‘দ্য ফোর হান্ড্রেড বোজ’, ‘কনফিডেনশিয়ালি ইওরস’, ‘জুলে এ জিম’ এবং ‘দ্য লাস্ট মেট্রো’।

এগুলো দেখা যাচ্ছে রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে। বরাবরের মতো এবারও ভেন্যু হিসেবে আছে শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরের মূল ও সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ এবং স্টার সিনেপ্লেক্স। উদ্বোধনী সিনেমা হিসেবে প্রদর্শিত হয় ফাখরুল আরেফিন খান নির্মিত ‘জেকে ১৯৭১’।

সব্যসাচী চক্রবর্তী।

এদিন উপস্থিত ছিলেন এ সিনেমার অভিনেতা ‘ফেলুদা’খ্যাত সব্যসাচী চক্রবর্তী। এতে তিনি পাকিস্তানি একজন পাইলট চরিত্রে অভিনয় করেন। দর্শক সারিতে বসে তিনিও সিনেমাটি দেখেন। সব্যসাচী বলেন, ‘এমন একটি আয়োজনের সঙ্গে থাকতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। আরও ভালো লাগছে উদ্বোধনী সিনেমাও আমার অভিনীত। আমি মনে করি এমন আয়োজন আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন।

তাহলে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির মানুষদের মেলবন্ধন আরও সহজ হয়ে যাবে। উৎসবের পুরো আয়োজনটি আমার বেশ ভালো লাগছে। অনেক দেশের সিনেমার মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’ ১৫-১৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক সেমিনার নবম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস কনফারেন্সটি ঢাকা ক্লাবের স্যামসন লাউঞ্জের ৩য় তলায় অনুষ্ঠিত হয়।

অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।

এতে ১৬ জানুয়ারি অংশগ্রহণ করেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। একই দিনে জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হয় তার নির্মিত ও অভিনীত ‘ছাদ’ স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি। সিনেমাটির প্রদর্শনীতেও উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আমার এবারের সফরটি আমার জন্য অন্যরকম। কারণ এবার আমার সঙ্গে আমার সিনেমাটিও এসেছে। কলকাতার ফেস্টিভ্যালে আমার সিনেমাটি নির্বাচিত হয়নি। কিন্তু ঢাকায় হয়েছে। এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। নানা দেশের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি।’ তবে উৎসবে বিভিন্ন দেশের সিনেমার মানুষদের দেখা গেলেও ঢাকায় সিনেমার মানুষদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো না। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নায়িকা রোজিনা ছাড়া দেশীয় সিনেমার তেমন কেউ ছিলেন না।

তবে রাতে নির্মাতা কাজী হায়াৎসহ আরও কয়েকজন আসেন বলে জানান উৎসবের পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামান। কেন দেশীয় সিনেমাঙ্গনের মানুষদের অংশগ্রহণ কম? এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আহমেদ মুজতবা জামান বলেন, ‘আমাদের জুরিবোর্ডে সিনেমার অনেকেই ছিলেন।

এছাড়া আমরা সিনেমার খ্যাতিমান মানুষদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কেউ আসছেন, কেউ হয়তো ব্যস্ততার কারণে আসতে পারছেন না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন উৎসবে সিনেমার মানুষেরা নিজ থেকে সাদরে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু সত্যি বলতে আমাদের এখানে ব্যতিক্রম বলতে হয়। তবুও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার জন্য।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh