পাবলিক লাইব্রেরি বন্ধ: নষ্ট হচ্ছে ১৮ হাজার বই

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:০৮ পিএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম

জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: প্রতিনিধি

জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি। ছবি: প্রতিনিধি

জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি ছয় মাস ধরে বন্ধ। এক সময়ের সাহিত্যচর্চার কেন্দ্রবিন্দু ও পাঠকের আনাগোনায় মুখরিত এ লাইব্রেরির প্রায় ১৮ হাজার মূল্যবান বই নষ্ট হচ্ছে। অযত্নে থাকা ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে নিঃসঙ্গভাবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর পৌরসভার বকুলতলা মোড় সংলগ্ন সরকারি পাবলিক লাইব্রেরির চারপাশ জরাজীর্ণ ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। তালা ঝুলছে প্রধান ফটকে। জানালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মূল্যবান বই। ধুলোবালি, পোকা-মাকড়, মাকড়শায় ছেয়ে গেছে বই রাখার কক্ষটি। ফলে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান বই ও নথিপত্র।

সূত্র জানায়, দেশি-বিদেশি বইয়ের ভাণ্ডারখ্যাত ঐতিহ্যবাহী এ লাইব্রেরিটি ১৯৫৯ সালে পৌরসভার একটি কক্ষে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীকালে ১৯৭৬ সালে শহরের বকুলতলা মোড়ে ২৯ শতাংশ জমিতে নতুন আঙ্গিকে কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকেই লাইব্রেরিটি শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। পাঠকদের পাদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে লাইব্রেরি প্রাঙ্গণ।

পাঠকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকারি-বেসরকারি অনুদানে প্রায় ১৮ হাজার বই ক্রয় করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন পিয়ন নিয়োগ করা হয়। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ও হল রুম ভাড়ার টাকায় চলত তাদের বেতন। বর্তমানে সদস্যরা মাসিক চাঁদা ও হলরুম ভাড়া না হওয়ায় তাদের বেতন বকেয়া পড়েছে দীর্ঘদিনের।

এ কারণে তারাও দায়িত্ব পালন করছেন না। লাইব্রেরি পরিচালনার জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও তাদেরও কার্যক্রম নেই দীর্ঘদিন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে পাবলিক লাইব্রেরির এ করুণ দশা।

বেতন বকেয়ার কারণে লাইব্রেরি ছেড়েছেন লাইব্রেরিয়ান শ্যামল চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, একসময় লাইব্রেরিতে প্রচুর পাঠকের সমাগম হতো। জ্ঞানচর্চার এক অনন্য নজির ছিল এ প্রতিষ্ঠানটি। তবে বেতন বকেয়া ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আর লাইব্রেরিতে যান না। বর্তমানে লাইব্রেরির কী অবস্থা তাও বলতে পারেননি তিনি। একই অবস্থা পিয়ন দুদু মিয়ারও। 

পাবলিক লাইব্রেরির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, পাবলিক লাইব্রেরি জেলার প্রাচীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি। কিন্তু রাজনীতি ও কমিটির অন্য সদস্যদের অসহযোগিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি সচল করতে পারিনি। 

এ বিষয়ে পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, পাবলিক লাইব্রেরি পরিদর্শন করে সচল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh