সমন্বিত বালাই ব্যবস্থায় সবজি চাষে সফল কৃষক

গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) কৌশল অবলম্বন করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন কৃষকরা। আশানুরূপ ফলনও পাচ্ছেন তারা। কীটনাশক ও রাসায়নিক সার না ব্যবহার করে কম খরচে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

এরই মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বোয়ালিয়া ইউনিয়নকে আইপিএম মডেল ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে। ওই এলাকার আলমপুরে ২০টি গ্রুপে ৫০ জন করে ৫০০ জন প্রান্তিক কৃষককে প্রতিদিন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। পরামর্শসহ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকারসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বোয়ালিয়া ইউনিয়নের তিনটি স্থানে আইপিএম কৌশলের মাধ্যমে একশ একর জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে নিরাপদ সবজি। ফসলের ক্ষতিকারক রোগবালাই দমনে ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ কাগজে আঠালো ফাঁদসহ অন্যান্য উপায় ব্যবহার করা হয়। এতে উৎপাদন ব্যয়ও কমেছে, লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

রফিক নামে এক কৃষক জানান, সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ভট্টা, করোলা, আলু, টমেটো ও সরিষার চাষাবাদ করেছেন। রাসায়নিক সার বা কীটনাশক জাতীয় কোনো বিষ প্রয়োগ করেননি। কৃষি অফিসের লোকজন প্রতিদিন এসে যেভাবে পরামর্শ দিয়েছে, সেভাবে ফসল উৎপাদন করছেন। উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ ও সংরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ক্ষতি করে এমন পোকা দমন করা হয় এই পদ্ধতিতে। সেই সঙ্গে অন্যান্য উপকারী পোকাসহ জীব রক্ষা হয়। জৈব সার ব্যবহার করে ফসল ফলাচ্ছে কৃষক। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, কৃষাণ-কৃষাণীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে বাস্তব ভিত্তিতে কৌশল শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

পরিবেশবান্ধব নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক ছাইদা আক্তার পরাগ ওই এলাকা পরিদর্শনকালে বলেন, শরীর সুস্থ রাখতে নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। ফসলের ক্ষেতে রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক (কীটনাশক) ব্যবহারের ফলে কেবল পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে না, ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়তে হচ্ছে জনগণকে।

অহরহ কীটনাশক ব্যবহারের ফলে শত্রু পোকার সঙ্গে মারা যাচ্ছে উপকারী বন্ধু পোকা। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সারাদেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আইপিএম প্রকল্পের আওতায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের মডেল প্রকল্পের মাধ্যমে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করেছে।