হারপিস জোস্টার কী

ডা. মেহেদী হাসান অশ্রু

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১৮ পিএম

হারপিস জোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

হারপিস জোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

হারপিস জোস্টার একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যাদের চিকেন পক্স বা জলবসন্ত হয়েছিল তাদের স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে এটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে। কোনো কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটি ত্বকে তীব্র জ্বালাপোড়া ও ব্যথার উদ্রেক করে। ছোটদের তুলনায় বড়দের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি। 

কারণ: যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, বয়স্ক মানুষ (বয়স ৬৫-এর ঊর্ধ্বে), ইনফেকশন যেমন: এইডস, কোভিড-১৯ (সম্প্রতি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও এটি দেখা যাচ্ছে) ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। 

উপসর্গ 

. জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তি অনুভব হওয়া।

. বুকের যে কোনো একপাশে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। ৩-৪ দিন পর ফুসকুড়ির মতো ওঠে এবং তা মুখ, চোখ ও শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও হতে পারে। 

. চোখের স্নায়ুতে হলে কর্নিয়ার আলসার হতে পারে এবং দিন দিন দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে পারে।

. মুখের স্বাদ নষ্ট হতে পারে এবং মুখ গহ্বরে আলসার হতে পারে।

. কানে সংক্রমণ হলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। 

. ব্রেইন ও লিভারে সংক্রমণ হতে পারে এবং যা হতে পারে মারাত্মক।  

পরীক্ষা-নিরীক্ষা: হারপিস জোস্টার নির্ণয়ের জন্য সাধারণত কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে না। রোগীর উপসর্গ ও ইতিহাস দেখেই রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে কিছু পরীক্ষা প্রচলিত আছে রোগ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য। 

চিকিৎসা: এই রোগের ক্ষেত্রে ছোটদের জন্য কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের প্রয়োজন হয় না। বড়দের ক্ষেত্রে এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের জন্য অ্যান্টিভাইরাল (এসাইক্লোভির) ওষুধ কার্যকর, যেটি রোগের তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব কমাতে সাহায্য করে। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ও প্রিগাবালিন জাতীয় ওষুধ কার্যকর।  

জটিলতা: সাধারণত ৩-৫ সপ্তাহের মধ্যে র‍্যাশ ও ব্যথা চলে যায়। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যথা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। এটিকে বলে ‘পোস্ট হারপেটিক নিউরালজিয়া’। পোস্ট হারপেটিক নিউরালজিয়ার চিকিৎসা বেশ সময় সাপেক্ষ ও কঠিন।  এর চিকিৎসায় অ্যামিট্রিপ্টাইলিন, প্রিগাবালিন, গাবাপেন্টিন ও অন্যান্য ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। 

প্রতিরোধ: Zostavax এবং Shingrix নামক দুই ধরনের ভ্যাকসিন বাজারে পাওয়া যায়। বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ভেরেসিলা জোস্টার ইমুউনোগে্লাবিউলিন ওষুধটি বেশ কার্যকর।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh