পুঠিয়ায় ফসলি জমি বিনাশ করে পুকুর খননের হিড়িক!

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:১১ পিএম

পুকুর খননের কাজ চলছে। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি

পুকুর খননের কাজ চলছে। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি

‘জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না’ এমন সরকারি নির্দেশ থাকলেও রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলি কৃষি জমিগুলো পরিণত করা হচ্ছে গভীর পুকুরে। অপরিকল্পিতভাবে গত একমাসে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে একদিকে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে বিনাশ হচ্ছে ফসলি জমি।

এদিকে গত মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুইজন পুকুর মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানাও করেছেন।

তবে এলাকাবাসীরা অভিযোগ তুলে বলছেন, আইনি জটিলতা এড়াতে জমির মালিকরা পুকুর খনন করতে ক্ষমতাসিন দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ও দুটি দপ্তর কর্মকর্তার সাথে বিশেষ চুক্তি করেন। এরপর পুকুর খননের কাজ চলে। আর যারা চুক্তিতে যায় না তাদের জেল-জরিমানা গুনতে হয়।

জানাগেছে, চলতি বছর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কান্দ্রা গ্রামে, জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া, গ্যাইংপাড়া, বিলমাড়িয়া, শিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের রাতোয়াল পাড়া ও ভালুকগাছি ইউনিয়ন এলাকার ৬ স্থানে ফসলি জমিতে পুকুর খনন কাজ চলছে পুরোদমে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তন্ময় কুমার সরকার বলেন, গত তিন বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পুকুর খনন করা হয়েছে উপজেলার শিলমাড়িয়া, ভালুকগাছি ও জিউপাড়া ইউনিয়ন এলাকাতে। অভিযোগ আসছে এ বছর আবারো বিভিন্ন এলাকায় ফসলি খেতে পুকুর খনন শুরু হয়েছে। 

তিনি বলেন, এভাবে পুকুর খননের প্রভাবে বর্ষা মৌসুমে এলাকায় দীর্ঘ মেয়াদী জ্বলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। সেই সাথে এলাকায় ফসলি জমির পরিমাণ কমছে। যা আগামীতে খাদ্য যোগানেও প্রভাব পড়বে।

জিউপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, গত প্রায় এক মাস থেকে ধোপাপাড়া, বিলমাড়িয়া ও সরিষাবাড়ী এলাকায় ভেকু মেশিনে একাধিক পুকুর খননে কাজ চলছে। আর পুকুরের মাটি নিচ্ছে উপজেলার ১০-১২টি অবৈধ ইটভাটার মালিকরা। মাত্রাতিরিক্ত মাটি বহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে ও থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।

এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ বলেন, পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছেন। গত ডিসেম্বর মাসেও কান্দ্রা গ্রামে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে ফসলি জমিতে পুকুর খননের কারণে ওই মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। বাকি গুলোতেও অভিযান করা হয়েছে। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দের জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh