কদর কমেছে শীতল পাটির

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৪৫ পিএম

 শীতল পাটি। ছবি: প্রতিনিধি

শীতল পাটি। ছবি: প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা চত্বর থেকে ঝাঐল ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। গ্রামটির বেশিরভাগ মানুষই হিন্দু। এ গ্রামে নারী-পুরুষেরা বাপ-দাদার আমল থেকেই শীতল পাটির সঙ্গে জড়িত। শীতল পাটি বুনে ও বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছে শিল্পটি।

কারিগর পাচ্ছে না পারিশ্রম অনুযায়ী ন্যায্যমূল্য। এর পরও নারীরা শত কষ্টে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। এ গ্রামের ২০০ পরিবারের প্রায় ৮০০ নারী-পুরুষ তাদের জাত পেশা হওয়ায় এখনো টিকিয়ে রেখেছেন এ শিল্প।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষেরা জমি থেকে পাটি বেত কেটে আনছেন। পরে সেগুলো দা দিয়ে এক ধরনের বেতী সুতা বানিয়ে সিদ্ধ করে রোদে শুকানো হচ্ছে। বেতী সুতাগুলো রোদে শুকানোর পর বাহারি রং দিয়ে আবার রোদে শুকানো হচ্ছে। বেতী সুতা রোদে শুকানোর পর শ্রমিকরা নিপুণ হাতে তৈরি করছে শীতল পাটি। প্রকারভেদে বিক্রি হয় প্রায় ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

সোহাগী বুলবুলি, বেলী ও সীমা এই নারী কারিগরেরা সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকাকে বলেন, তাদের শীতল পাটির টাকায় চলে সংসার। শীতল পাটির কদর অনেকটা কমে গেছে। শীতল পাটির দাম কিছুটা বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়েনি। পাটির আকার অনুযায়ী কারিগরেরা পান ১৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। তাদের একটি পাটি বুনতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। একটা পাটি বুনতে যে পরিশ্রম আর সময় লাগে সে অনুযায়ী ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না বলে জানান। 

দুলাল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই শীতল পাটির সঙ্গে জড়িত। শীতল পাটি বুনিয়ে ও বিক্রি করেও তার সংসার চলে। বর্তমানে প্লাস্টিকের পাটি ও মোটা পলিথিন কাগজসহ নানা প্লাস্টিক পণ্যের জন্য শীতল পাটির কদর কমে গেছে। 

এ বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা সুলতানা বলেন, পাটি তৈরির শিল্পীদের দুবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে শিল্পটি বাঁচানোর জন্য উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কীভাবে শীতল পাটির বাজারজাত বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh