খাবার পানির সংকটে কয়েক গ্রাম

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:০৫ পিএম

খাবার পানির তীব্র সংকটে যুগ যুগ পার করছেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার মানুষ।

খাবার পানির তীব্র সংকটে যুগ যুগ পার করছেন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার মানুষ।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ছবির মতো সুন্দর কয়েকটি গ্রামের মানুষ খাবার পানির তীব্র সংকটে যুগ যুগ পার করছেন। শুষ্ক মৌসুমে কুয়া এবং বর্ষাকালে ঝরনার পানি খেয়ে তাদের দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। প্রায় সময় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়লেও এর সমাধানে কারও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।

ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম ঘিলাগড়া। ছবির মতো সুন্দর এ গ্রামে ৪৬টি গারো এবং আড়াইশ মুসলিম পরিবারের বসবাস। অবহেলিত নিম্ন আয়ের এখানকার মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা সুপেয় খাবার পানি। গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে অগভীর কয়েকটি টিউবওয়েল থাকলেও তা দিয়ে পানি না ওঠায় কুয়া এবং ঝরনার পানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে সেখানকার মানুষের।

শুধু ঘিলাগড়া নয়, স্বাধীনতার পর থেকে দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের দিঘলবাগ, গোবরচানা এবং গাছুয়াপাড়া গ্রামের মানুষও খাবার পানির জন্য তীব্র কষ্টে ভুগছেন। গভীর টিউবওয়েল স্থাপনের বিষয়টি প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলেও কাজের কাজ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবহেলিত এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা। 

সম্প্রতি ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘিলাগড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব খাদিজা বেগম একটি নালার ধারে গর্তের মধ্যে কিছু পাথর রেখে কলসির মধ্যে চুয়ে আসা পানি তুলছেন। আধঘণ্টার চেষ্টায় তিনি কলসিটি পানি দিয়ে ভরে বাড়ি ফেরেন। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় এভাবে কষ্ট করে হলেও পানি তুলে খেতে পারছি। বর্ষাকালে তাও জোটে না কপালে। বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। বৃষ্টি আসলে জং ধরা চালের টিন বেয়ে যে পানি পড়ে তা সংগ্রহ করে জীবন চলে। 

একই এলাকার একটু দূরে গিয়ে দেখা যায় পাথরের সাহায্যে তিনজন নারী গর্ত থেকে কলসির মধ্যে পানি তুলছেন। সাংবাদিক দেখে অনেকটাই ক্ষুব্ধ হয় তারা। গীতা জিসিম নামে এক নারী বলেন, বাড়ির উঠানে টিউবওয়েল থাকলেও পানি ওঠে না। বারবার চাপলে একটু পানি উঠলেও তা অনেক আবরণযুক্ত, খাওয়া সম্ভব হয় না।

তাই কুয়ার পানি তাদের শেষ ভরসা। এখানকার মানুষের জীবনমান খুবই সাধারণ। খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। সরকার নানা প্রান্তে উন্নয়ন করলেও আমরা এদিকে বঞ্চিত। 

জনস্বাস্থ্য ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রতি ইউনিয়নে বছরে ২৬টি করে টিউবওয়েল বসানো হলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা ছাড়া অন্য কিছু করার সুযোগ থাকে না। তবে অবহেলিত স্থানে যেন গুরুত্ব দিয়ে টিউবওয়েল বসানো হয় সেই বিষয়টি অবহিত করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh