বরিশালে একাদশ শ্রেণিতে এক লাখ আসনে ৩০ হাজার খালি

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৬ পিএম | আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:০৮ পিএম

বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। ফাইল ছবি

বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। ফাইল ছবি

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধিনে কলেজগুলোতে একাদশে আসন সংখ্যা প্রায় এক লাখ। যার বিপরীতে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে ৯৪ হাজার ৮৭১ জন শিক্ষার্থী। তার ওপর গত ২৬ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৭২ জন।

সে হিসেবে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার কলেজগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার আসন এখনো খালি রয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজ না পাওয়ায় এসব আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি বলে দাবি বোর্ড কর্তৃপক্ষের।

আর তাই এবার পুরনো নিয়মেই শূণ্য আসনগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে কলেজগুলোতে। পূর্বের নিয়মে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৫৫১ জনসহ প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছেন। এরই মধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে কলেজগুলোতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে।

গত রবিবার ঢাকায় আন্ত জেলা শিক্ষা বোর্ডের বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. লিয়াকত হোসেন। তবে ভর্তির আবেদনের শেষ সময় কবে তা জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

এই কর্মকর্তা বলেন, শহরের ভালো কলেজে সবাই ভর্তি হতে চায়। তাই গ্রামের কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের চরম ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ এবার কারিগরি শিক্ষার দিকে ঝুকেছে। এসব কারণে সাধারণ কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ভবিষ্যত পরিস্থিতি মোকাবেলায় নতুন কলেজ অনুমোদন ও আসন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান শিক্ষা বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে কলেজগুলোতে গত ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তবে এখনো প্রায় ৩০ হাজার আসন শূণ্য রয়েছে। তাছাড়া এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৫৫১ জন শিক্ষার্থী এখনো কোন কলেজে ভর্তি হয়নি।

ড. মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কলেজগুলোতে প্রায় ১ লাখ আসন রয়েছে। যার বিপরীতে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে প্রায় ৩০ হাজার আসন এখনো খালি। তবে আসন ১ লাখ থাকলেও এবার বোর্ডে এসএসসি পাশ করেছে ৯৪ হাজার ৮৭১ জন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আসনে ঘটতি নেই। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গ্রামের সাধারণ কলেজে ভর্তি হতে পাচ্ছে না। তাই গত বছরও নির্ধারিত সময়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ভর্তি হয়নি। যে কারণে গতবার পাঁচ ধাপে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়েছে। এবারও হয়তো সেই পথেই হাটতে হবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, তার ছেলে এবার জিলা স্কুল থেকে লেটার মার্ক নিয়ে এসএসসি পাশ করেছে। তার পছন্দের কলেজ সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ। ওই কলেজ পাওয়ার জন্য তিনবার আবেদন করেছে। কিন্তু একবারও পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি। তাই এখন এনালগ পদ্ধতিতে ভর্তির আপেক্ষা করছেন।

এই অভিভাবক প্রশ্ন তুলে বলেন, যারা জিপিএ-৫ পেয়েছে তারা তাদের পছন্দের প্রথম কলেজেই ভর্তির দাবি রাখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ডিজিটালে সেই স্বপ্ন পুরণ করতে না পেরে এখন এনালগ পদ্ধতির অপেক্ষা করছে। এটাই যদি হয় তবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তির আবেদন করে লাভ কি?

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, বিষয়টি নিয়ে বরিশাল বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পছন্দের কলেজ বন্টনের চতুর্থ তালিকা প্রকাশ করেছেন। তারা আশা করছেন এই তালিকায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের কলেজ পেয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এটা কোন সিস্টেমের মধ্যেই পড়ে না। মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের পছন্দের কলেজ অগ্রাধিকার দিতে হবে। তা না হলে তারা কোনভাবেই নিশ্চয়ন করবে না, এটাই স্বাভাবিক। আর এ কারণেই এখনো সাড়ে পাঁচশ জিপিএ-৫ প্রাপ্তসহ ২৮ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকে কোন কলেজই পায়নি।

প্রসঙ্গত, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বরিশালে বোর্ডে মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯৪ হাজার ৮৭১ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ একাদশে উত্তীর্ণ হয়েছে ১০ হাজার ৬৮ জন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh