ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:০৫ পিএম
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন। ছবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্নাতকোত্তর পর্যায়ের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগকর্মীদের বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার বিচার চেয়ে আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, কুষ্টিয়ায় সন্ধ্যা ৭টার পরে ক্যাম্পাস বাসের সামনে সিট ধরে রাখি আমি। বাসের পেছনের দরজা দিয়ে সামনে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা আমাকে কারণ জিজ্ঞেস করে। এ সময় ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকর্মী সামিউল ইসলামসহ কয়েকজন আমার সাথে তুইতোকারি শুরু করে ও ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে নামার পরপরই সামিউল শার্টের কলার ধরে এবং সিএসই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন, সিয়াম, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তরুণ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মিন্টু হোসাইন ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সৌমিকসহ আট-দশজন এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে আমি গুরুতর আহত হলে আমার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মার খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে হচ্ছে। এর থেকে বড় আফসোস হতে পারে না। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে তারা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করল। আমি এর বিচার চাই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাবিল আহমেদ ইমন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের ছোট ভাই এবং অন্যরা ছাত্রলীগ সম্পাদকের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
অভিযোগের বিষয়ে সামিউল ইসলাম বলেন, বাসের মধ্যে প্রচুর ভিড় থাকায় ওকে ভেতর দিয়ে যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু ও না শুনে আমাদের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে ওকে ডেকে বুঝাতে গেলে আবারও তর্কে লিপ্ত হয়। এ সময় ও ওর বন্ধুদের নিয়ে আমাদের ওপর চড়াও হলে হাতাহাতি হয়। আমি ওকে হুমকি-ধমকি দিইনি।
সামিউলের বন্ধু তারিকুল ইসলাম তরুণ বলেন, বাসে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদির মধ্যেই তাড়াহুড়ো করে সামনে যেতে চাইলে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। পরে ক্যাম্পাসে নেমে তাকে ডেকে কথা বলতে গেলে উল্টো আমাদের ওপরই চড়াও হয়। তখন ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমরা কয়েকজন ছিলাম একসঙ্গে ওই ছেলের সাথেও তার বন্ধুরা ছিল।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি বাসে কথাকাটাকাটির পর ক্যাম্পাসে রিয়াদ ও তার বন্ধুরা সামিউলদের ওপর চড়াও হয়। এতে ধস্তাধস্তি হয়। এখন আবার দেখছি রিয়াদ প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল উভয় পক্ষকে নিয়ে বসব।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমার অফিসে অভিযোগপত্র এসেছে। ব্যস্ততার কারণে আজ অভিযোগ দেখার সুযোগ পাইনি। আগামীকাল বিষয়টি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।