নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৪০ পিএম
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের আলোচিত ব্যবসায়িক গ্রুপ আদানির কাছ থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কেন কেনা হয়েছে তা নিয়ে জাতীয় সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু।
আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মুজিবুল হক চুন্নু।
জাপার এই নেতা বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হলাম যে, আদানি গ্রুপ নিয়ে ভারতে এত সমালোচনা, সেই আদানি গ্রুপ ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। তাদের থেকে আনা প্রতি ইউনিটের মূল্য ২৪ টাকা ১০ পয়সা। বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে ৬ হাজার কোটি টাকা। আদানি গ্রুপ থেকে এত উচ্চমূল্য দিয়ে আমরা কেন বিদ্যুৎ আনব? আনলে এটা জনগণের স্বার্থে কি না এ বিষয়ে সরকার আবারও পরীক্ষা করে দেখবে।
মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে ভারতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপর আদানির সব কোম্পানির শেয়ারের দামে ধস নেমেছে। এ নিয়ে ভারতের লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সমালোচনা করে দেশটির বিরোধী দলগুলো।
বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক রাখতে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। চুক্তির আওতায় আদানি ঝাড়খন্ডে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে বাংলাদেশে সরবরাহ করবে। আগামী মার্চ থেকে এ বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি সংশোধন প্রশ্নে ভারত বলল— সরকার জড়িত নয়আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি সংশোধন প্রশ্নে ভারত বলল— সরকার জড়িত নয়
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যুতে ভর্তুকি দিতে হয়। এটা ঠিক। আমরা গ্রামে গ্রামে বিদ্যুতের লাইন পেয়েছি। কোনো সন্দেহ নাই। সমস্যা হলো, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য রেগুলেটরি কমিশন ছিল, এখন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সেটা তার হাতে নিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিদ্যুতের দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করবেন।
সমন্বয়ের নামে বিদ্যুতের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করে মুজিবুল হক বলেন, বাংলায় সমন্বয় মানে হলো একটার সঙ্গে আরেকটার সমন্বয় করা। আসলে এটা হবে প্রতি মাসে মূল্য বৃদ্ধি। জানুয়ারি মাসে দুইবার মূল্যবৃদ্ধি করেছেন। এটা যদি সহনশীলতার মধ্যে না থাকে, মানুষ সেটা ব্যবহার করতে পারবে কি না সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকবে।
চুন্নু বলেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াটে প্রতি ইউনিটের দাম ১৩ টাকা ৩৭ পয়সা। বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ ৩ হাজার কোটি টাকা। এস আলম কোম্পানির ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াটের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এসেছে ১৮ টাকা ৩৯ পয়সা। ক্যাপাসিটি চার্জ ৫ হাজার কোটি টাকা।