অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৩৬ এএম
ভূমিকম্পে তুরস্কের একটি শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
যখন কোথাও ভূমিকম্প হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয় কিংবা ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তাওবা করা। তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা। মহান আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
পবিত্র কোরআনে ‘ভূমিকম্প’ (Earthquake) নামের একটি সুরা আছে। এর নাম হলো ‘জিলজাল’।
মানুষের কর্মকুশলতা পরীক্ষার জন্য মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন ‘জীবন ও মৃত্যু’। সুরা মুলকের সূচনায় আছে : ‘খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়াতা...’ অর্থাৎ আল্লাহ জীবনের আগেই মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন নানাভাবে। মানুষ অনিবার্য কিয়ামতের দিকে ধাবিত হচ্ছে, যা এক মহাপ্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প। ইরশাদ হয়েছে : ‘পৃথিবী ভীষণভাবে উঠিবে কাঁপিয়া/ভিতরের বোঝা দেবে বের করিয়া।/ মানুষ বলিবে তখন কী হলো ইহার/ব্যক্ত করিবে খবর যাবতীয় তার।’ (কাব্যানুবাদ, সুরা জিলজাল : ১-৪)
আল্লাহর ঘোষণা, ‘জনপদের অধিবাসীরা কি এতই নির্ভয় হয়ে গেছে যে আমার আজাব (নিঝুম) রাত তাদের কাছে আসবে না, যখন তারা (গভীর) ঘুমে (বিভোর হয়ে) থাকবে!’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯৭)
ভূকম্পনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের সতর্ক করেন, যাতে তারা অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর পথে ফিরে আসে।
মহান আল্লাহ তার বান্দাদের সতর্ক করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিদর্শন সৃষ্টি করেন। বান্দাদের উচিত তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া, যাতে করে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে, তাদের বোধোদয় হয়।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৫৯)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, “বলে দাও, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ ’’ (সুরা আনআম : ৬৫)
বুখারি শরিফে জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘ ‘যখন তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ ” (বুখারি) শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) এই আয়াতের তাফসির করেছেন এভাবে : ‘এর ব্যাখ্যা হলো, ভূমিকম্প ও ভূমিধসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া (পৃথিবীতে ভূমিকম্প হওয়া)।’
আল্লামা ইবনু কাইউম (রহ.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ কখনো কখনো পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন, যার ফলে তখন বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। এটা মানুষকে ভীত করে। ফলে তারা মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করে। পাপকাজ ছেড়ে দেয়। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং তাদের কৃত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়।’
প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ মানুষের অপকর্ম। এগুলোর পথ ধরেই মানুষ কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘যখন জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তি তাদের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন) পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ্) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য।’ (তিরমিজি)