নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২১ পিএম
শাহনাজ পারভিন ও রিজওয়ান ইসমাম তাসপি। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের রিজওয়ান ইসমাম তাসপি। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। আট বছর বয়সে পড়ালেখা শুরু করেন। পড়ালেখায় নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল তার। তবে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মায়ের কাছে পড়া শুনে শুনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। শুধু তাই নয়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজে মানবিক বিভাগ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তাসপি। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষক হতে চান তিনি।
তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও শাহনাজ পারভিন দম্পতির ছেলে।
পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাসপির একমাত্র সঙ্গী তার মা শাহনাজ। তিনি বই পড়ে শোনান, ছেলে তা শুনে মুখস্ত করেন। কখনো কখনো তিনি বই পড়ে রেকর্ড করে রাখতেন যা পরে শুনে মুখস্ত করতেন।
তাসপির মা শাহনাজ বলেন, প্রচণ্ড মেধাবী তাসপি। কোনো পড়া একবার শুনলে তার মুখস্ত হয়ে যেত। সে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। এসএসসি পরীক্ষায় গণিতে সঠিকভাবে শ্রুতিলেখক না পাওয়ায় জিপিএ-৫ পায়নি। তবুও এসএসসিতে সে জিপিএ-৪ দশমিক ৭২ পেয়েছে। এবার এইচএসসিতে সরকারি মুজিব কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ছেলের ফলাফলে আমি খুবই খুশি।
তিনি আরো বলেন, আমার একমাত্র ছেলে তাসপি। আরেকটা মেয়ে আছে। আমার হাত ধরে তাসপি স্কুলে যাতায়াত করতো। আমি উত্তর চরকাঁকড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার বাবা চট্টগ্রামের সরকারি পোস্ট অফিসে চাকরি করেন। ফলে আমার কাছেই তাসপির বেড়ে ওঠা। তার বন্ধুরা ছিল খুব আন্তরিক। তারাও অনেক সহযোগিতা করেছে। আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন।
সরকারি মুজিব কলেজের শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, মানবিক বিভাগ থেকে ১০জন জিপিএ-৫ পেয়েছে তার মধ্যে তাসপি একজন। তাসপি খুব মেধাবী ছেলে। আমি ক্লাসে যা পড়াতাম, সেগুলো সে মনোযোগ দিয়ে শুনত, আর রেকর্ড করে নিত। তার জন্য দোয়া করবেন।
রিজওয়ান ইসমাম তাসপি বলেন, আমার পড়াশোনায় সব থেকে বেশি ভূমিকা মায়ের। শিক্ষক-সহপাঠীরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। বিশেষ করে শ্রুতিলেখকের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যুক্ত হতে চাই। আমার মতো কোনো শিক্ষার্থীকে যেন এত কষ্ট না করতে হয় সেজন্য কাজ করতে চাই।