যুব উন্নয়নে ব্যাপক অনিয়ম, সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৫ পিএম

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। যার মধ্যে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা।

কমিটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত বিতর্কিত আদেশ বাতিল, দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও শূন্যপদে পদোন্নতির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।

আজ রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ওই সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও এন এম নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অনিয়ম ও দুনীতির একাধিক অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে সাবেক উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করা হয়।

বলা হয়, ওই কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা এবং আদালত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানেননি। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ১১২ জন সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অথচ তাদের কয়েকজন চাকরিতে জুনিয়রই নন, তাদের পদোন্নতি পাওয়ার মতো কোনো দক্ষতা নেই। মহাপরিচালক মো. আজাহারুল ইসলাম খান ওই আদেশে স্বাক্ষর করলেও এই অনিয়মের মূল হোতা মোখলেছুর রহমান। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক বিভাগীয় মামলা থাকলেও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বৈঠক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের  ২৫ নভেম্বর ১১২ জন সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে চলতি দায়িত্ব দিয়ে এক আদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্যের চিত্র উঠে আসে।

পরে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতও ওই আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করে আদেশটি বাতিলের নির্দেশনা দেয়। ২০২২ সালের ১৮ জুলাই দেওয়া আদালতের আদেশটি বাস্তবায়ন না করে ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশে কিংবা সুবিধাজনক স্থানে তাদেরকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।

এই অনিয়মের কারণে অন্তত ৭০ জন পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য কর্মকর্তা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার ১১৫ জনের পদোন্নতির প্রস্তাব প্রস্তুত থাকলেও তা মহাপরিচালকের অনাগ্রহের কারণে বাস্তবায়ন হয়নি বলে বৈঠকে দাবি করা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারী অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোখলেসুর রহমানের অপরাধ এবং তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় কর্তৃক শাস্তিমূলক কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ১১৫ জন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে অবৈধ চলতি দায়িত্বাদেশ বাতিল করে জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh