প্রেস কাউন্সিলের আওতায় আসবে অনলাইন পত্রিকা: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪০ পিএম | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:২৯ পিএম

 প্রেস কাউন্সিলের আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

প্রেস কাউন্সিলের আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যুগের প্রয়োজনে প্রেস কাউন্সিল আরও শক্তিশালী হবে, অনলাইন পত্রিকাগুলোও এর আওতায় আসবে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তোপখানা রোডে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রেস কাউন্সিলের ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নেতৃত্বে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্র ন্যায়নীতি ও যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে পরিচালনা ও গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত গভীরে প্রোথিত করতে চেয়েছিলেন। সে কারণে সংবাদপত্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং একইসাথে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা যাতে একটি জুডিশিয়াল বোর্ডের কাছে গিয়ে তাদের অনুযোগ উপস্থাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে তিনি এই প্রেস কাউন্সিল গঠন করেন।

যুগের সাথে গণমাধ্যমের বহুমাত্রিকতা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেস কাউন্সিল তার ৪৯ বছরের পথ চলায় দেশে সংবাদপত্রের সাথে জনগণের, পাঠকের সাযুজ্য ঘটানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজকে সংবাদমাধ্যম শুধু প্রিন্ট মিডিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যখন প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয়েছিল তখন অনলাইন গণমাধ্যম ছিল না এবং এতো সংবাদপত্রও ছিল না। ফলে প্রেস কাউন্সিল তার আইনানুসারে সংবাদপত্র ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে না।

মন্ত্রী উল্লেখ করেন, অনলাইন পত্রিকা ও পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোকে আওতায় আনা ও প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাউন্সিলের সদস্যরাই কয়েক বছর ধরে অংশীজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করে একটি খসড়া আইন চূড়ান্ত করেছেন।

তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিলের বেশির ভাগ সদস্য সাংবাদিক, সাংবাদিক সংগঠনের নেতা এবং পত্রিকার সম্পাদক। তারাই এটি চূড়ান্ত করেছেন। কিন্তু খসড়া চূড়ান্ত হয়ে যখন আইন প্রণয়নের দিকে যাচ্ছিল তখন এর বিরোধিতা শুরু হয়েছে। সব দেশেই আইন সংশোধন করা হয়, অথচ বাংলাদেশে আইন যুগোপযোগী করতে গেলেই একটা পক্ষ এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। আশা করি প্রকৃত সাংবাদিকরা এ বিষয়ে এগিয়ে আসবেন।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যারা বিরোধিতা করছে তাদের নিয়ে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছি। তিনি বলেন, আলাপ আলোচনা করলে ভুল বোঝাবুঝির নিরসন হবে, কারণ প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করা মানে সাংবাদিকদের শক্তিশালী করা।

বর্তমান বাস্তবতা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন ফেসবুক পেজ খুলে সেটিকেও গণমাধ্যম হিসেবে প্রচার করা হয়। সংশ্লিষ্ট সবাই আবার সাংবাদিক পরিচয় দেয়। গ্রামে-গঞ্জে এখন যে ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল, ভুঁইফোড় ফেসবুক, আবার একটা ক্যামেরা নিয়ে কিছু করা, ঐটাই একটা মিডিয়া -এটিই বাস্তবতা। ফলে কোনটি প্রকৃত সংবাদমাধ্যম এবং কে সাংবাদিক, তা নিয়ে বিরাট বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এগুলোর একটা সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, যারা সত্যিকারের সাংবাদিক তারা এর সাথে কখনই যুক্ত নয়। সাংবাদিকরাও চায় এগুলো থেকে মুক্তি। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর দাবিও এটি। আমি আপনাদের দাবির সাথে একাত্ম। এ জন্য সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন প্রয়োজন। প্রেস কাউন্সিল এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়েই এটি করা বাঞ্ছনীয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার গণমাধ্যমবান্ধব সরকার। বাংলাদেশে গণমাধ্যম যতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করে সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ। আমরা মনে করি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বিকাশ অপরিহার্য। 

প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মোজাফফর হোসেন পল্টু, ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং এম জি কিবরিয়া চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh