রংপুরকে হারিয়ে ফাইনালে সিলেট

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে টানটান উত্তেজনার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ১৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠলো সিলেট স্ট্রাইকার্স। 

আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)  মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ১৮২ রানের পুঁজি পেয়েছিল মাশরাফি মর্তুজার দল। 

রনি তালুকদার-নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে ম্যাচ অনেকটা মুঠোয় চলে এসেছিল রংপুর রাইডার্সের। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ৩৩ রান।  

১৭ ওভার শেষে রংপুরের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৫০ রান। চোটে পড়া মুশফিকুর রহিমের মাঠে ফেরা নিয়ে কিছু একটা কারণে তখন মিনিট তিনেক বন্ধ থাকে খেলা। এরপরই ক্যাচ তুলে ফিরে যান সোহান। শেষ ১৮ বলে তারা আনতে পারে স্রেফ ১৩ রান!  

রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় রংপুর। এই ম্যাচের জন্য উড়িয়ে আনা ইংলিশ ওপেনার স্যাম বিলিংস ভ্রমণ ক্লান্তিতে নেমে হয়েছেন ব্যর্থ। ৪ বল খেলে তানজিম সাকিবের বলে এলবিডব্লিউতে ফেরেন তিনি।

আগের ম্যাচের নায়ক শামীম পাটোয়ারি এবারও ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন, নিভেছেনও দ্রুত। ১১ বলে একটি করে ছয়-চার মেরে ১৪ রান করে রুবেলের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

রনিই দায়িত্ব নেন, তবে এক পাশে উইকেট পড়ায় কিছুটা গুটিয়ে যেতে হয় তাকে। রানরেটের বেড়ে যাওয়া চাপ নামাতে থাকেন নিকোলাস পুরান। জর্জ লিন্ডাকে দুই ছয়ের পর মাশরাফি ও লুক উডকেও উড়ান ছক্কায়। বিপদজনক এই ক্যারিবিয়ান ফেরেন লিন্ডার দারুণ ক্যাচে। ফ্লিক করেছিলেন পুরান, ওয়াইড লং অনে ঝাঁপিয়ে বড় উইকেট পাইয়ে দেন তিনি।

তবে চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক সোহানকে নিয়ে খেলা বদলে দিতে থাকেন রনি। উইকেট পড়া দেখে নিজেকে গুটিয়ে রাখা এই ডানহাতি দ্রুতই মেলেন ডানা। পরিণত ক্রিকেটের প্রদর্শনীতে তুলে নেন টুর্নামেন্টের নিজের তৃতীয় ফিফটি। সোহান ক্রিজে এসে দেরি করেননি, দ্রুত রান আনার চেষ্টা করে গেছেন অবিরত। 

জুটিতে ৫২ বলে ৮২ আসার পর ফেরেন সোহান। খেলার মাঝে অপ্রত্যাশিত বিরতি মনোযোগ নাড়িয়ে দিয়ে থাকবে তার। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ উঠিয়ে ২৪ বলে ৩৩ করে বিদায় নেন তিনি।

১৭ বলে দলের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩৩ রানের। সেই সমীকরণ মেলাতে পারেননি বাকিরা।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তৌহিদ হৃদয় ছিলেন আড়ষ্ট, ঠিকমতো ডানা মেলতে পারছিলেন না তিনি। নাজমুল হোসেন শান্তরও বাউন্ডারি পেতে কয়েক বল লেগে যায়। পরে অবশ্য তিনি পুষিয়ে দিতে থাকেন। যদিও পাওয়ার প্লেতে আসে পঞ্চাশ রানের কম।

পাওয়ার প্লে পেরিয়ে যাওয়ার পরও টাইমিং পেতে মুশকিলে পড়ছিলেন হৃদয়। থিতু হয়ে শান্ত বড় রানের আভাস দিচ্ছিলেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপ রাখা শেখ মেহেদী হাসান নিজের শেষ ওভারে ফেরান শান্তকে। খানিকটা এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে পা লাগান সিলেটের ওপেনার। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় রংপুর।

আগের দিনের মতো নিজেকে উপরে তুলে আনেন অধিনায়ক মাশরাফি। এদিন একদম তিনে নেমে যান তিনি। নেমেই প্রথম বলেন মারেন ছয়।

অধিনায়ককে সঙ্গে দিতে পারেননি হৃদয়। পরের ওভারে নিজের অস্বস্তিকর উপস্থিতি থামান হাসান মাহমুদের বলে। 

জাকির হাসান ক্রিজে এসে চাঞ্চল্য দেখিয়েছিলেন, বেশি দূর এগুতে পারেননি। তাকে থামান দাসুন শানাকা। রায়ান বার্লকেও শিকার ধরেন তিনি। তবে তার আগে ২ চার, ১ ছয়ে মাত্র ৬ বলে ১৫ করে ফেলেন জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার।

মাশরাফি টিকে গিয়েছিলেন বেশ কিছুটা সময়। ১৬তম ওভারে ডোয়াইন ব্র্যাভোর স্লোয়ার উড়াতে গিয়ে বিদায় তার। তবে ১৬ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে কার্যকর ২৮ করে দলে অবদান রাখেন তিনি।

ছয়ে নেমে অভিজ্ঞ মুশফিক এদিনও ব্যর্থ। হাসানের ফুলটসে মিড উইকেটে ক্যাচ দেওয়ার আগে করতে পারেন কেবল ৬ রান। সিলেটের পুঁজি ১৮০ ছাড়িয়ে নেন জর্জ লিন্ডা আর থিসারা পেরেরা। ১৫ বলে ২১ করেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। প্রোটিয়া অলরাউন্ডার লিন্ডা শেষ ওভার কাজে লাগান দারুণভাবে। দুই ছয়, এক চারে আনেন ১৭ রান। তার ১০ বলে ২১ রানের ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে রাখল বড় ভূমিকা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh