এই সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যা করা যায়

রুবানা শারমীন লুপা

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:১৬ এএম

কমিউনিটি সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

কমিউনিটি সার্ভিস। ছবি: সংগৃহীত

মানসিকভাবে দেশের বেশিরভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে বিপর্যস্ত। করোনা ভাইরাস মহামারি এসে তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিসিএস প্রস্তুতিতে বেশি মনোযোগ দিতে গিয়ে অবশেষে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী- এমন ঘটনাও ঘটছে! আবার বেশিরভাগ উচ্চবিত্ত পরিবারে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা থাকার পরও মানসিকভাবে ভালো নেই তারা, ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে।  

চিন্তাগুলোর গতি-প্রকৃতি ঠিকমতো তৈরি ও নিয়ন্ত্রণ করতে না জানলে হতাশা জেঁকে বসে। সবকিছু আসলে অনুধাবন করার ব্যাপার। এটা ব্যক্তিবিশেষে নির্ভর করে। এসবের মূলে রয়েছে আত্মকেন্দ্রিকতা। নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরতে ইঁদুরদৌড়ে জড়িয়ে পড়ছি ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বা পরিবারকে অতিরিক্ত ফোকাস করতে। 

সন্তান-সন্ততি বড় হয়ে নিজেদের পরিবার গড়ে তুলবে যেমনটি আমাদের মা-বাবারা গড়ে তুলেছেন। আমরাও তা অনুসরণ করছি। এটাই পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী সময়ের নিয়ম। কেউ এর বাইরে নয়। সন্তান, আত্মীয়-স্বজন, ক্যারিয়ার নিয়ে  মাত্রাতিরিক্ত ফোকাস করলে হতাশ হওয়ার আশঙ্কা বেশি; কেননা এর সঙ্গে অর্থনৈতিক, সম্পত্তি, আকাঙ্ক্ষার সম্পর্ক জড়িত। মূল দায়িত্বগুলো পালন করার পাশাপাশি সমাজের অন্য মানুষের জন্য ভালো কাজ করতে জোর দেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে স্বার্থের সম্পর্ক নেই, চাওয়া-পাওয়ার ইস্যুও জড়িত নয়। 

তাই কমিউনিটি সার্ভিসকে গুরুত্ব দিয়ে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে একাকিত্ব ঘোচানোর পাশাপাশি অন্য এক ধরনের তৃপ্তি আসবে যাতে আপনি ভালো থাকবেন। এটা গবেষণায়ও প্রমাণ হয়েছে। এতে হ্যাপি হরমোনগুলো বেড়ে যায়, যা ডিপ্রেশনে বিরুদ্ধে কাজ করে।  

এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কমিউনিটি সার্ভিস বা সামাজিক কাজ কী, এতে আমার কি সুযোগ আছে? উত্তর হলো- সবারই ভালো সুযোগ রয়েছে এবং এগুলো আশপাশেই। কিছু উদাহরণ- বুয়া, দারোয়ান, রিকশাচালক-শ্রেণির মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্মান দিয়ে সহানুভূতি দেখানো, তাদের খোঁজখবর নেওয়া। অসুস্থ রোগী দেখতে যাওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো, এলাকার বয়স্ক মানুষদের খোঁজ নেওয়া, অভাবীকে দান করা, তরুণ ও যুবকদের প্রডাক্টিভ রাখতে ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করা (লেখালেখি, গবেষণা, শিক্ষকতা), নিয়মিত রক্ত দান ও অন্যকে উদ্বুদ্ধ করা। 

নিয়মিত টার্গেট করে এমন কাজ একটু একটু করতে থাকুন, দেখবেন  একাকিত্ব, হতাশা চলে যাবে এবং জীবনের অর্থ খুঁজে পেয়ে যাবেন। এসব জেনেও অনেকের হয়তো আগ্রহ কাজ করে না। এজন্য সমমনা মানুষের সার্কেল খুঁজে বের করতে হবে, যারা পজিটিভ কাজে সহযোগিতা করবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh