শাহ আবদুল করিমের গানে সমাজ ভাবনা

এস ডি সুব্রত

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:১৭ পিএম | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৪ পিএম

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। ছবি: সংগৃহীত

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। ছবি: সংগৃহীত

লোকসংস্কৃতির আধার হাওরকন্যা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ধল আশ্রম গ্রামে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। পিতার নাম ইব্রাহিম আলী এবং মাতার নাম নাইওরজান বিবি। পরবর্তীকালে ধল আশ্রম গ্রামের পার্শ্ববর্তী উজান ধল গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। নিজ গ্রামের নৈশ বিদ্যালয়ে মাত্র আট রাত্রি পড়াশোনা করেছেন তিনি। ছিলেন সংসারের বড় ছেলে।

দিনে কাজ শেষে রাত্রিবেলায় বাউল গান আর যাত্রা পালা শুনতে যেতেন গ্রামে গ্রামে। নসীব উল্লাহর কণ্ঠে বাউল গান শুনে কিশোর আবদুল করিম বিমুগ্ধ হন এবং আস্তে আস্তে বাউল গানের ভুবনে জড়িয়ে পড়েন বাউল গানের অন্যতম কিংবদন্তি লোকায়ত ধারার সাধক বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তার ঘটনাবহুল প্রায় শতবর্ষী জীবন।

অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছেন বাউল আবদুল করিম। নিত্য টানাটানির সংসারে হাল ধরতে গিয়ে গ্রামের গৃহস্থের বাড়িতে গরু রাখালের কাজ করেছেন কিশোর বয়সে বাউল সাধক শাহ আবদুল করিম। লোকসংস্কৃতির আধার হাওরকন্যা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ধল আশ্রম গ্রামে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। পিতার নাম ইব্রাহিম আলী এবং মাতার নাম নাইওরজান বিবি।

পরবর্তীকালে ধল আশ্রম গ্রামের পার্শ্ববর্তী উজান ধল গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। নিজ গ্রামের নৈশ বিদ্যালয়ে মাত্র আট রাত্রি পড়াশোনা করেছেন তিনি। ছিলেন সংসারের বড় ছেলে। দিনে কাজ শেষে রাত্রিবেলায় বাউল গান আর যাত্রা পালা শুনতে যেতেন গ্রামে গ্রামে।

নসীব উল্লাহর কণ্ঠে বাউল গান শুনে কিশোর আবদুল করিম বিমুগ্ধ হন এবং আস্তে আস্তে বাউল গানের ভুবনে জড়িয়ে পড়েন। সাধক করম উদ্দিন ও রশীদ উদ্দিনের সান্নিধ্যে বাউলতন্ত্রে মনোনিবেশ করেন। বিভিন্ন জায়গায় আমন্ত্রণ পেয়ে গান গাইতে যেতে থাকেন। আবদুল করিম থেকে শাহ আবদুল করিম হয়ে ওঠেন মানুষের ভালোবাসায়।

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম মানবতত্ত্ব নিয়ে সব সময় ভাবতেন। মানবজীবনের গূঢ় রহস্য নিয়ে তার ভাবনা ছিল প্রবল। মানবজীবন নিয়ে তিনি বরাবরই আগ্রহী ছিলেন। মানবজীবনের মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে গিয়ে তিনি বলেন-

“মানবতত্ত্বের কী মাহাত্ম্য

বোঝে কয়জনে 

মানবতত্ত্ব প্রকাশিল

অতি সন্ধানে।” 

শাহ আবদুল করিম বাংলার অসাম্প্রদায়িক সংস্কতির প্রতি ছিলেন অত্যন্ত আস্থাশীল। তিনি তার এবং তাদের বাল্যের অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে স্মরণ করে বর্তমান কালের সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন দৃষ্টে ব্যথিত হয়েছেন। সে বেদনাকে তিনি প্রকাশ করেছেন তাই গানের বাণীতে, “আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম। গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু-মুসলমান/মিলিয়া বাউলা গান, ঘাটুগান গাইতাম/আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম \”

আমাদের সাধের মানবজীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। আমরা এখানে ক্ষণিকের অতিথি মাত্র। এ পৃথিবীর রূপ, রস ও সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। চলতে চলতে অনিবার্য সমাপ্তির মুখোমুখি হতে হয় আমাদের সকলকেই। শাহ আবদুল করিম তার গানে এর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন এভাবে-

“আমি আছি আমার মাঝে

আমি করি আমার খবর

আমি থাকলে সোনার সংসার

আমি গেলে শূন্য বাসর।”

শাহ আবদুল করিম তার সঙ্গীত জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন, “প্রথম থেকেই আমার গানের প্রতি টান। হিন্দু মুসলমানের দেশ, গানের একটা পরিবেশ ছিলো। দাদা সারিন্দা নিয়ে গান গেয়ে বেড়াতো।”

“ভাবিয়া দেখো মনে

মাটির সারিন্দা বাজায় কেমনে ”

গানটা একেবারে ছোটবেলাতে শাহ আবদুল করিমের মনে গভীর দাগ কাটে। তারপর দিনে দিনে তিনি একসময় কেবল গানের সুর-বাণীতেই নিজেকে সমর্পিত করেন। এ কথাটি তিনি তার গানেই প্রকাশ করেছেন সুর ও বাণীর যুগল সম্মিলনে,

“আর কিছু চায় না মনে গান ছাড়া।” তবে একাও ঠিক যে, শাহ আবদুল করিমের গান বিনোদনধর্মী কোনো গান নয়। তার গানে বিভিন্ন তত্ত¡কথা ও জীবন দর্শন যেন একাকার হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন, দেহতত্ত্বের সাথে দেহ শব্দটি আছে। আর এই দেহ তো শরীর। এর মধ্যে কী কী বস্তু আছে। দেহের মধ্যে চক্ষু আছে, কর্ণ আছে এ সমস্ত আর কি। আমি এসব বুঝি বলে, মানুষে আমাকে পীর বলে মানে। আসলে, দেহ সম্পর্কে যারা ভালো জানেন তাদেরকেই পীর বলা হয়।

এই ধারায় আমার মুর্শিদের নাম মওলা বক্স। মানুষের জীবনে পীরদের ভজতে হয়। আর পীর ভজলেই তত্ত¡ কথা পাওয়া যায়। দেহের মধ্যেই সকল সত্য নিহিত থাকে। দেহ আত্মা ইত্যাদির তত্ত্বই দেহতত্ত্ব। পঞ্চেন্দ্রিয়যুক্ত দেহই যে সকল শক্তির আধার এবং ইহাই যে আধ্যাত্মিক সাধনার একমাত্র পথ- এসব বর্ণনাই দেহতত্ত্ব গানের উদ্দেশ্য। শাহ আবদুল করিমের দেহতত্ত্বের একটি উল্লেখযোগ্য গান-

“আগে দেহের খবর জানগেরে মন,

তত্ত্ব না জেনে কি হয় সাধন। 

দেহে সপ্তস্বর্গ সপ্ত পাতাল 

চৌদ্দ ভুবন কর ভ্রমণ 

দেখনা খুঁজে কোথায় বিরাজে 

তার পরম গুরু আত্মারাম ”

শাহ আবদুল করিমের জন্মের মাত্র বছর দুই আগে দেহ রাখেন বাউল সাধক কুষ্টিয়ার ফকির লালন সাঁই। সুনামগঞ্জ অঞ্চলের অন্যান্য সাধক হলেন হাসন রাজা, শীতালং শাহ, রাধারমণ, দূরবীণ শাহ প্রমুখ। তাদের সবার গান ও জীবন দর্শনে শাহ আবদুল করিম স্পষ্ট ধারণা রাখতেন। লালন ফকিরের গান সম্পর্কে তিনি বলতেন- আমি লালন ফকিরের গান শুনেছি, গেয়েছি, তার গান মূলত তত্ত্বগান।

রাধারমণের গানের সঙ্গে নিজের গানের মিল-অমিল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাহ আবদুল করিম বলেছিলেন, রাধারমণের গানের সাথে আমার গানের বেশ মিল আছে। ছোটবেলা থেকে তার গান শুনে আসছি। তার অনেক তত্ত্ব গান আছে, যা হিন্দু মুসলমান সবাই পছন্দ করে। তবে খুব গভীর তত্ত্ব নাই।

তার গানের মধ্যে রাধা-কৃষ্ণের ভাবধারার গান বেশি। আর আমি দেহতত্ত্বকে বেশি ভালোবেসেছি। দেহের মাঝেই সবকিছু আছে। শাহ আবদুল করিম একই সঙ্গে ভক্তিবাদী এবং যুক্তিবাদী। ভক্তিকে তিনি যুক্তির নিরিখে বিচার করে নিতেই পছন্দ করতেন। তার সাহসী উচ্চারণ তাই গান হয়ে উঠেছিল-

“দেখাও দাও না কথা কও না

আর কত থাকি দূরে।

মুর্শিদ শোনো হে কেমনে চিনি তোমারে।”

ঈশ্বর সম্পর্কে তার সরল ও দৃঢ় যুক্তিবাদী উচ্চারণ ছিল-

“শুনি উনি আছেন। দেখি নাই তো কোনোদিন।”

যুক্তিবাদী বিবেচনার ভেতর দিয়ে তিনি প্রকতিবাদী এবং সর্বপ্রাণবাদীর মতো কথা বলতেন। শাহ আবদুল করিম বাংলার অন্য সাধকদের থেকে ছিলেন একেবারে ব্যতিক্রম। তিনি সাধনসঙ্গীতের পাশাপাশি রচনা করেছিলেন জনমানুষের অধিকার আদায়ের গান ‘গণসঙ্গীত’। শাহ আবদুল করিমের গণচেতনা বাংলাদেশের শহুরে শিক্ষিত সঙ্গীত বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাদৃত ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ড. মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী বলেন, “ভাষা আন্দোলন নিয়ে শাহ আবদুল করিমের গান আছে। এদেশের বাউল সাধকদের মধ্যে শাহ আবদুল করিম যে গণচেতনা প্রকাশ করেছেন তা সত্যি অন্যরকম একটা ঘটনা। এছাড়া তার প্রেমের গানগুলোও অকৃত্রিম, যা শহরের আধুনিক শিল্পীদের অবলম্বন বা ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে দেখে আনন্দই লাগে।”

ব্যক্তিজীবনে শাহ আবদুল করিম ছিলেন সহজ সরল। সহজ সরলতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন তাত্ত্বিক। তাই তো তার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়- মানবদেহের হাত ও পায়ের বিশ আঙুলের কথা। তিনি বলেছেন এভাবে-“আজব রঙের ফুল ফুটেছে 

মানবগাছে 

চার ডালে তার বিশটি পাতা

কী সুন্দর আছে ”

দেহতত্ত্ব নিয়ে বাউল সম্রাটের ভাবনা ছিল অতি সূক্ষ্ন। তিনি বলেন-

“গাড়ি চলে না, চলে না 

চলে না রে

গাড়ি চলে না ” 

আমাদের এই উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক কিংবা মৌলবাদী ধ্যান ধারণার গভীরে অনুসন্ধান চালালে পাশ্চাত্যের দিকেই অভিযোগের তীর ধাবিত হবে। তবে সে ক্ষেত্রে নিজেদের দায় দায়িত্ব পুরোপুরি অস্বীকার করার উপায় নেই। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পাশাপাশি সে সময়ের উচ্চবিত্তরা দায়ী ছিল বহুলাংশে। সেদিনের হিন্দু উচ্চবিত্তদের লাগানো আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিলেন মুসলিম উচ্চবিত্তরা নিজেদের স্বার্থ আর আধিপত্য কায়েমের জন্য।

বাউল বা লোকায়ত ধারায় প্রেম ভালোবাসার মাধ্যমে পরকে আপন করার প্রয়াস লক্ষ করা যায়। বাউল সাধক ও বাউল গীতিকবিদের সাথে সমাজের নিম্নবর্গের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের একধরনের সহমর্মিতা সব সময়ই লক্ষ করা যায়। তারা অতি সহজেই সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের অংশীদার হয়ে ওঠেন। তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারণা নিয়ে চলতে পছন্দ করেন।

বাংলার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে যেমন বিভিন্ন ধর্মমত গ্রহণ করেছেন, আবার সময়ের খাতিরে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ধর্মের কঠোরতাকে গ্রহণ না করে গ্রহণ করেছেন উদারতাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের এ অঞ্চলে বিকাশ লাভ করেছে বাউল সাধনা। মাটি ও মানুষের জীবন একাত্ম হয়ে গেছে বাউলের ডেরায়। বাউল একটি জীবন দর্শন। এখানে সাধনা হয়।

এখানে চর্চা হয় মানবতার গান, মানুষের গান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার গান। অন্য বাউলদের থেকে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমও ব্যতিক্রম নন। বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম মানুষের জীবনের সুখ দুঃখ প্রেম ভালোবাসার পাশাপাশি গেয়েছেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার গান। দুঃখী মানুষের মনের কথা বলেছেন অন্তর দিয়ে। তার লেখা ও গাওয়া গানে এবং কর্মে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বারবার। আজীবন তিনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছেন।

দেড় হাজারেরও বেশি গানের গীতিকার বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম তার গানে তুলে ধরেছেন শোষণ বঞ্চনার কথা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারণা। আজ থেকে একশ বছর আগেও হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ ও হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলগুলো ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য আবাস। এ ধরনের মনন ও চিন্তার নিদর্শন পাওয়া যায় বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের লেখা ও গাওয়া গানে-

“আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম

 গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান 

 মিলিয়া বাউলা গান ঘাটুগান গাইতাম।”

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের কাছে সব মানুষ ছিল সমান, এক মায়ের সন্তান। তাই তো তিনি অবলীলায় বলতে পেরেছেন ....

“এইসব নিয়ে দ্বন্দ্ব কেন 

 কেউ হিন্দু কেউ মুসলমান

 তুমিও মানুষ আমিও মানুষ

 সবাই এক মায়ের সন্তান।” 

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছিলেন সব সময়ই সোচ্চার। সেটা তিনি প্রকাশ করেছেন তার লেখা গানে। তাই তো তিনি বলতে পেরেছিলেন-

“বাউল আবদুল করিম বলে সূক্ষ্ন রাস্তা ধরো,

শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে বাঁচার উপায় করো।”

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সংগঠিত করার জন্য সকল ধর্মের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম।

“কৃষক মজুর ভাই, হিন্দু-মুসলিম প্রভেদ নাই

বাঁচার মতো বাঁচতে চাই সবাই বলরে।” সিলেট অঞ্চলে একটি আন্দোলন হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। সিলেটের হরিপুরে আবিষ্কৃত হয়েছিল তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র। সেই তেল গ্যাস ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ করার স্বার্থে দেশীয় দালাল গোষ্ঠীর সাথে আঁতাত করে সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা শুরু হয়েছিল। তখন দেশের প্রগতিশীল নাগরিক এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন। সেই সময় সিলেটের সুনামগঞ্জের বাউল শাহ আবদুল করিম ‘তেল চোরা’দের নিয়ে একটি গান লেখেন এবং বিভিন্ন জায়গায় গানটি ছিল এরকম-

“হরিপুরে হরিলুট কেন, দেশবাসী কি খবর জানো;

তেলচোরা তেল নিল শোন, এদেশকে করতে চায় শ্মশান।”

গ্রামবাংলার সহজ সরল নির্মল পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন শাহ আবদুল করিম। একদিকে বিশাল হাওরের থৈ থৈ জলরাশি, অন্যদিকে হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ তার মনের জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে দারুণভাবে। নন্দিত এই বাউল সম্রাট ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh