বিকৃত যৌনাচারের পর তরুণীকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম | আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৮ পিএম

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

বিকৃত যৌনাচারের পর ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তারকে (১৪) শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ঘর থেকে বের হলে ওই শিক্ষার্থীকে বাড়ির কাছেই রাতভর দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যা করে আট সিরিয়াল রেপিস্ট।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান (২৬), হামেদ আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৩৮), আবু হনিফার ছেলে মাসুম বিল্লাহ ওরফে ফজর আলী (২২), আবুল কালামের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৪), আ. হাইয়ের ছেলে রাসেল মিয়া (১৯)। তারা প্রত্যেকে জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও পলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঞা বলেন, নিহত ফাতেমা আক্তার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতেন। ঘটনার দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে নিখোঁজ হন। ওই দিন অনেক খোঁজাখোঁজি করেও ফাহিমার কোন সন্ধান মেলেনি। পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে আমগাছে ফাহিমার ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন স্থানীয়রা। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এবং সুরতহাল প্রতিবেদনে যৌনাঙ্গ-পায়ুপথ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এই ঘটনার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরীর মা মোছা. হাসনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাতে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ আরো জানায়, ঘটনার দিন সিরিয়াল রেপিস্ট শাহজাহান বাড়ির পাশে ওৎ পেতে বসেছিল। পরে ফাহিমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হলে ফাহিমাকে মুখ চেপে ধরে আখ ক্ষেতে নিয়ে ৮ জন মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাট করতে ফাহিমাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে। শাহজাহান মিয়ার কাছ থেকে ফাহিমার মোবাইল জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দিনে ইটভাটায় কাজ করতো আর রাতে ধর্ষণসহ নানা অপরাধে লিপ্ত হতো। 

গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন আদালতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয় এবং অপর তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

মামলার বাদী নিহতের মা মোছা. হাসনা বেগম বলেন, কারো সাথে আমাদের কোন শত্রুতা ছিল না। মেয়ে মোবাইলেও কারো সাথে কথা বলতো না। কিন্তু কেনো আমার মেয়ের সাথে এমন হলো আমরা এর সঠিক বিচার চাই। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh