টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের প্রথমবার ইংলিশ বধ

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:২৩ পিএম | আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৩, ০২:৫৯ পিএম

ছবি: ক্রিকইনফো

ছবি: ক্রিকইনফো

প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। সিরিজের পরের ম্যাচ ঢাকাতে আগামী ‌১২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) টসে জিতে ইংল্যান্ডকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। শুরুটা ইংল্যান্ডের পক্ষে গেলেও, শেষটা ছিল বাংলাদেশের। দলের তিন পেসার শেষ পাঁচ ওভারে রান দেন মাত্র ৩০। বাউন্ডারি হজম করে মাত্র দুটি। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৮০ রান করা ইংল্যান্ড, শেষ ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তুলতে পারে মাত্র ৭৬ রান। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫৭ রানের।

রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটাররাও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। সাগরিকায় ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। ৮ বছর পর দলে ফিরেই ব্যাট হাতে প্রত্যাশা পূরণ করেন রনি। শুরুর জুটিতে লিটনের সঙ্গে গড়েন ৩৩ রান। ১৪ বলে ২১ রান করে রনি বিদায় নিলে প্রথম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই লিট্নকে হারিয়ে ফের হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। পঞ্চম ওভারে আর্চারের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন (১২)।

তবে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুই ব্যাটার মিলে ৩৯ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন। ১২তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন ইংলিশ স্পিনার মঈন আলি। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে কারানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৭ বলে ২৪ করে  ফেরেন তৌহিদ। এরপরই ২৭ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন শান্ত। ১৩তম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে থামে শান্তর ইনিংস। ৮ বাউন্ডারিতে ৩০ বলে ৫১ রান করেন তিনি। যেটা দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।

৪ রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে সেই চাপ ভালোভাবে সামাল দিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাকিব  ব্যাট হাতে ২৪ বলে ৩৪ রান করেন। তার সঙ্গে আফিফ করেন ১৫ রান।

এর আগে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের শুরুটা হয় স্পিনার নাসুম আহমেদকে দিয়ে। প্রথম ওভারেই ৯ রান খরচ করেন এই বাঁহাতি বোলার। সাফল্য পেতে নাসুমের পরই দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন ও তৃতীয় ওভারে মুস্তাফিজকে আক্রমণে আনেন সাকিব। যদিও তাতে খুব বেশি লাভ হয়নি। ইংল্যান্ডের  দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট শুরুটা করেন দেখেশুনেই।

দলীয় ৪৫ রানেই ইংলিশদের প্রতিরোধ ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে নাসুমের বলে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন অধিনায়ক নিজেই। আর এই সুযোগে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫১ রান। এরপর আরও আক্রমণাত্নক হয়ে ওঠে ইলিংশরা। ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলে ৮০ রান। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার নাসুম। দলীয় ৮০ রানে ৩৮ রান করা সল্টকে ফেরান নাসুম। এরপর উইকেটে আসেন ডেভিড মালান। তাকে খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থিতু হতে দেননি সাকিব। দলীয় ৮৮ রানে মালানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ দলে স্বস্তি এনে দেন সাকিব।

তবে এরপরই ডাকেটকে নিয়ে নতুন করে পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন বাটলার। এই দুইজনের ৪৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলে ইংল্যান্ড। দলীয় ১৩৫ রানে ডাকেটকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরান মোস্তাফিজ। মুস্তাফিজের পরই বাটলারকে ফেরার হাসান মাহমুদ। ৪২ বলে ৬৭ রান করেন বাটলার। এরপর হাসান মাহমুদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের বড় স্কোরের আশায় লাগাম টানে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি সফরকারী ইংল্যান্ড।

উল্লেখ্য, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটিই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়। গত বছর আগেরটি জিতেছিল ইংলিশরা। জয়-পরাজয়ে দুদলের সমীকরণ এখন ১-১।

ইংল্যান্ড : ২০ ওভারে ১৫৬/৬ (সল্ট ৩৮, বাটলার ৬৭, মালান ৪, ডাকেট ২০, মঈন ৮*, কারান ৬, ওকস ১, জর্ডান ১*; নাসুম ৪-০-৩১-১, তাসকিন ৪-০-৩৫-১, মুস্তাফিজুর রহমান ৪-০-৩৪-১,সাকিব ৪-০-২৬-১, হাসান ৪-০-২৬-২)

বাংলাদেশ : ১৮ ওভারে ১৫৮/৪ (লিটন ১২, রনি ২১, শান্ত ৫১, তৌহিদ ২৪, সাকিব ৩৪, আফিফ ১৫; কারান ২-০-১৮-০, ওকস ২-০-২১-০, আর্চার ৩-০-২৭-১ , রশিদ ৩-০-২৫-১, উড ২-০-২৪-১, মঈন ৪-০-২৭-১, জর্ডান ২-০-১৬-০)।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh