ময়মনসিংহে আসছেন প্রধানমন্ত্রী, উদ্বোধন করবেন ১০৩ প্রকল্প

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ০৬:১৭ পিএম | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৩, ০৬:২০ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে বিভাগের সর্বত্রই এখন উৎসবের আমেজ। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে বিভাগের সর্বত্রই এখন উৎসবের আমেজ। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

পাঁচ বছর পর আগামীকাল শনিবার (১১ মার্চ) ময়মনসিংহে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেলে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিবেন তিনি। উদ্বোধন করবেন ৭৩টি নতুন প্রকল্প, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ৩০টি প্রকল্পের। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে বিভাগের সর্বত্রই এখন উৎসবের আমেজ। চাওয়া পাওয়ার তেমন কিছু না থাকলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার দাবি নাগরিক নেতাদের।

ময়মনসিংহ বিভাগ ও সিটি করপোরেশনসহ নানা উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ময়মনসিংহে আগমনকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই সাজসাজ রব। ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর সুদৃশ্য তোরণে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রতিটি সড়ক, সড়কদ্বীপসহ অলিগলি রাজপথ। ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা হবে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের।

শনিবার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন ৭৩টি প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন স্থানে ছবির ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ। ত্রিশাল উপজেলায় এক হাজার আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম কাম কম্পিউটার সেন্টার নির্মাণ। ৩২ পৌরসভার পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিট্যাশন প্রকল্প। ২১ বিদ্যালয় ও কলেজের ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ। ৫টি ব্রিজ নির্মাণ। দুইটি স্মৃতিসৌধ, তিনটি বাজার ও ৬টি ভবন নির্মাণ।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ৩০ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল কাম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ। ছত্রপুর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ১০তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ। আনন্দ মোহন সরকারী কলেজে নির্মাণাধীন ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট ৫তলা হোস্টেল ভবন নির্মাণ। ৩টি ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। ৪র্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক অপারেশন প্লানের আওতায় ১০তলা ভীত বিশিষ্ট ৬তলা বার্ন ইউনিট নির্মাণ। বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়ের ৭টি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪তলা ভীত বিশিষ্ট ৩তলা ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়, মাল্টিপারপাস হল প্রমুখ।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর সার্কিট হাউজের জনসভায় ১০৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৯৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের নতুন করে চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। বিগত সময়ে ময়মনসিংহের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু চায়নি। নেত্রী যা অনুধাবন করেছেন তাই দিয়েছেন। এবারও চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। উনি যা ভালো করবেন তাই দেবেন, আমরা তাতেই খুশি।

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামূল হক টিটু বলেন, বিভাগ সিটি করপোরেশন এবং শিক্ষাবোর্ড সবই নেত্রী আমাদের দিয়েছেন। আমরা নতুন করে তার কাছে কিছু চাই না। এগুলো বাস্তবায়ন হলে মানুষ সুফল ভোগ করতে পারবে। আমরা নেত্রীর জনসমাবেশে ১২ লাখের মতো মানুষের সমাগম ঘটিয়ে নেত্রীর মুখে হাসি ফুটাতে চাই। ময়মনসিংহবাসী শনিবার কৃতজ্ঞ স্বরে নেত্রীর জনসভায় যোগদান করবেন।

ময়মনসিংহ জন উদ্যোগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বিগত সময়ের চাওয়া পাওয়া পূর্ণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে আমরা উচ্ছ্বসিত আনন্দিত। জন উদ্যোগের পক্ষ থেকে ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা। এর পাশাপাশি ময়মনসিংহ নগরীর সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ যানজট নিরসনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দৃশ্যমান প্রস্তুতির দাবিতে বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম বলেন, সকলকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিভাগ, সিটি করপোরেশন এবং শিক্ষাবোর্ডের বাস্তবায়ন করেছি। বিভাগ ঘটনের প্রায় সাড়ে সাত বছর হলেও অবকাঠামোগত আমরা দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন দেখতে পারছি না। উন্নয়ন দৃশ্যমানসহ আমাদের ২৩ দফা যৌক্তিক দাবি আশাকরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নজরে নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।

তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যার চেয়ে রোগী প্রায় ১০ গুণ বেশি। রোগীরা শয্যা না পেয়ে বারান্দা, করিডোর, মেঝেতেও কোনো কোনো সময় শৌচাগারের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবা নেন। তিন হাজার শয্যার হাসপাতাল, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা, শেরপুর জেলার সঙ্গে রেল যোগাযোগ, শহরের যানজট নিরসনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।

জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঁঞা বলেন, জনসভাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তাকাজে নিয়োজিত রয়েছেন তিন হাজার পুলিশ। ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠের আশপাশের এলাকায় সকল ধরণের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শহরে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh