ড. ইউনূসকে নিয়ে খোলাচিঠি ষড়যন্ত্রের আলামত: হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ১১:০৩ পিএম

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। ছবি: ফাইল

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। ছবি: ফাইল

ড. ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ৪০ বিশ্বনেতা যে খোলাচিঠি দিয়েছেন, তা ষড়যন্ত্রের আলামত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

আজ শুক্রবার (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ, উন্নয়ন সরকার ও শান্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে কীসের অন্যায় হচ্ছে? তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। কোথায় কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন তার তদন্ত হচ্ছে। নোবেল বিজয়ী কি আইনের ঊর্ধ্বে? আমেরিকার এক নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন মামলা হয়েছিল। পরে জেলেও গিয়েছিলেন। আইন সব দেশে সবার জন্য সমান।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান হোন আর নোবেল বিজয়ী হোন না কেন অপরাধী হিসেবে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ড. ইউনূস অন্যায় করেছেন। তাই গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এটাকে হ্যারাসমেন্ট বলার কোনো সুযোগ নেই। এই চিঠি ষড়যন্ত্রের আলামত।

হানিফ আরো বলেন, হিলারি ক্লিনটন, বান কি মুনসহ বিশ্বের ৪০ জন নেতার নামে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এ চিঠি কাকে দিয়েছে? কারা দিয়েছে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নাকি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই চিঠি বিজ্ঞাপন আকারে দেখতে হবে? নিউজ আকারে আসেনি কেন?

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন পোস্ট বিজ্ঞাপন ছাপিয়েছে। আর আমাদের দেশে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার নিউজ করেছে। এসব দেখে ২০০৭ সালের কথা মনে পড়ল। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচারে মানুষ যখন রুষ্ট তখন আন্তর্জাতিক মহল বুঝতে পারল নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই। নতুন ফর্মুলা বের হলো, ড. ইউনূসকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হলো। আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু মনে হলো তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার কীসের ওপর পেয়েছেন। শান্তিতে নোবেল দেয় নরওয়ে সরকার। তারা আমেরিকার পক্ষ থেকে যে সুপারিশ করা তাকে এ নোবেল দেয়। ড. ইউনূস নোবেল পেলে মাইক্রোক্রেডিটের ওপর পাবেন কিন্তু তিনি সেটা পাননি। রহস্য এখানেই।

তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস এই চিঠির কথা বলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ড. ইউনূস নিজে সাজিয়ে লিখে যাদের নামের কথা লেখা হয়েছে সেসব ব্যবহার করে নিজেকে রক্ষা করতে চায়। দারিদ্র্য বিমোচনে ৯০ লাখ মহিলা নাকি ঋণ নিয়েছেন। যারা ঋণ নিয়েছিল তাদের ভ্যাগ্য পরিবর্তন ঘটেছে জানা নেই। আমরা শুনেছি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল পরে কিস্তি দিতে না পারায় মানুষের ঘরের টিন খুলে নিয়ে গেছে। ঝিনাইদহে ৩৭ জন আত্মহত্যা করেছে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে ঢাকায় রিকশা চালায় এমন অসংখ্য নজির আছে।

ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের টাকা দিয়ে নোবেল পুরস্কার কিনেছেন- এমন অভিযোগ করে হানিফ বলেন, গ্রামীণ টেলিকম অলাভজনক কোম্পানি করে একটা টাকাও নাকি লাভ তিনি নেননি। তদন্ত হচ্ছে। যখন গ্রামীণ টেলিকম তৈরি করা হয় তখন বলেছিলেন, ২০ হাজার নারীকে শেয়ার দিয়েছেন। নরওয়ের টেলিনর কোম্পানির কাছে ৩৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিলেন বা দান করে দিলেন। হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন এসব কোথায়? সেই টাকার হিসাব দিতে হবে। এসব শেয়ারধারী নারীদের কয় টাকা দিয়েছেন, প্রমাণ দেন।

হানিফ বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছেন এমন নজির নেই। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে তার বিন্দুমাত্র অবদান নেই। উল্টো মানুষকে নিঃস্ব করে দেওয়ার অজস্র রেকর্ড আছে। দেশের দুর্যোগে, ঘূর্ণিঝড় কবে কার পাশে তিনি এসে দাঁড়িয়েছেন এমন একটা নজিরও কেউ দেখাতে পারবে না।

এর আগে, গত মঙ্গলবার শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ৪০ বিশ্বনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি দিয়েছেন। তার অবদানকে সমর্থন ও স্বীকৃতি দিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন নেতারা। চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় পূর্ণ পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh