দেশের সাতটি খাতে বিদেশি বিনিয়োগের বড় সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৩, ০২:২৭ পিএম

বৈদেশিক মুদ্রা। ছবি: সংগৃহীত

বৈদেশিক মুদ্রা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। তবে আপাত দৃষ্টিতে তুলানামূলকভাবে সুফলের ধারাবাহিকতা বিবেচনায় দেশের সাতটি খাতে বিনিয়োগ করলে প্রবৃদ্ধি অনেক বহুগুণে আসবে।

বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড এবং অর্থনীতিবিদরা এমনটাই মনে করছেন।

এদিকে, গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) ঢাকায় ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধন করার সময় বিদেশিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আপনারা আসুন, বিনিয়োগ করুন, বাংলাদেশ সবসময় প্রস্তুত আপনাদের আগমনের জন্য।’

সামিটে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব বলছে, বাংলাদেশে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই এসেছে ৪৭০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। জুন ২০২২ সালের হিসাবে দেশে বর্তমানে মোট এফডিআই রয়েছে দুই হাজার ৫০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় এফডিআই প্রায় পাঁচ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশের যেসব খাতে বিদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সেগুলো বিবিসির বাংলার প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

১. অবকাঠামো:

বাংলাদেশ রূপকল্প-২০৪১ সালের যে পরিকল্পনা নিয়েছে, সেখানে অবকাঠামো খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে।

গতকালকেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এখন জ্বালানি, পানি, লজিস্টিক এবং পরিবহন খাতে ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অবকাঠামো গড়ার সুযোগ রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে শুধুমাত্র লজিস্টিকস খাতই ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজারে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত বছর ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিটে যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে দেশের বন্দরগুলো উন্নয়ন ও পরিচালনায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, পরিবহন খাত বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করা এবং আন্তর্জাতিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পিপিপি কাঠামো তৈরি করা।

২. তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য:

দেশে ৩৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে, যেগুলো বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। 

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে প্রায় ছয় লাখ ৫০ হাজার শিক্ষিত ও দক্ষ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে, যা বিশ্বে অনলাইন শ্রমের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম।

ফলে বাংলাদেশের সরকার আশা করছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাতে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হবে। এর বড় একটি অংশ আসবে বিদেশি বিনিয়োগ থেকে।

এদিন তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রশিক্ষণযোগ্য একটি বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী আছে, তারা বিভিন্ন বেসরকারি খাতে অবদান রাখতে পারে।

৩. ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন:

অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স খাতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে মানুষের আয় বাড়ার কারণে গৃহস্থালি বিলাসদ্রব্য এবং ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বাংলাদেশে যেভাবে অভ্যন্তরীণ বাজার বড় হচ্ছে, সেটা এমনকি সিঙ্গাপুরের কয়েকগুণ বড়। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোগ্যপণ্য ব্যবহার বেড়েছে, বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে। সেজন্য অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এর মধ্যেই সেটা লক্ষ্য করে আসতে শুরু করেছে, এখানে আরও ব্যবসার সুযোগ আছে।

বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স, ফ্রিজ-এসির মতো গৃহস্থালি পণ্য, মোটরবাইক- ইত্যাদি একসময় বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও এখন দেশেই উৎপাদন বা সংযোজন করা হচ্ছে।

৪. বস্ত্র ও চামড়া:

বস্ত্রের পাশাপাশি চামড়া শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। বিশ্বে বস্ত্র বাজারের মাত্র ছয় শতাংশ বাংলাদেশ পূরণ করে থাকে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে সুতি কাপড় বেশি বিক্রি হলেও সিনথেটিকের বিশাল মার্কেটে এখনো বাংলাদেশের তেমন দখল নেই।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তি রয়েছে, সরকারের বিশেষ বিশেষ এলাকা বা গুরুত্ব রয়েছে। ফলে এই খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সিনথেটিকের মতো যেসব পণ্য এখনো বিনিয়োগের বাইরে রয়েছে, সেখানে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা যেতে পারে।

তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে এটা নতুন একটা বাজার তৈরি হতে পারে।

চামড়া ও চামড়া-জাত পণ্যকে বিনিয়োগের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

২০২১-২০২২ অর্থবছরে এই খাত থেকে রপ্তানি হয়েছে ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত বছরের শেষদিকে একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া-জাত পণ্যের বার্ষিক রপ্তানি ১০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে চায় সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে চামড়া-জাত পণ্যের বাজারের আকার দাড়াতে পারে ৬২৪ বিলিয়ন ডলারে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই খাতের বিপুল সম্ভাবনা, বাংলাদেশে কাঁচামাল প্রাপ্তির সহজলভ্যতা, চামড়া শিল্পের জন্য বিশেষ নগরী-ইত্যাদি কারণে এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগের বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে।

৫. স্বয়ংস্ক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল:

বাংলাদেশে গাড়ির ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে কৃষি ও নির্মাণ কাজের যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক পণ্যের ছাঁচ, নাট-বল্টু, বেয়ারিং ইত্যাদি অনেক এখন দেশেই তৈরি করা হয়।

বাংলাদেশে গত এক দশকে স্বয়ংস্ক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল জাতীয় শিল্পের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। বিশাল করে অনেক বড় বড় শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় এসব সহযোগী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সারা দেশ জুড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানি করে বাংলাদেশে গাড়ির যন্ত্রাংশ, ধান মাড়াই মেশিন, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, নানারকম খেলনা তৈরি করা হয়। গত অর্থবছরে এই খাত থেকে ৭৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, এই খাতে আরও সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে শ্রমবাজারের খরচ কম হওয়ায় এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করাকে বিশেষ জোর দেয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলছেন, শিপ বিল্ডিং খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ওপরেও জোর দিচ্ছে সরকার।

৬. কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ:

কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণকে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অন্যতম সম্ভাবনাময় খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। ফরেন ইনভেস্টর্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) ২০২১ সালে একটি গবেষণার পর যে তিনটি খাতে বিনিয়োগের জন্য অবারিত সুযোগ আছে বলে চিহ্নিত করেছিল, তার মধ্যে রয়েছে কৃষি ব্যবসা।

এফআইসিসিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘আমরা যে গবেষণা করেছিলাম, সেখানে দেখা গেছে, কৃষি, ডিজিটাল ইকোনমি আর গ্রিন ফাইন্যান্স- এই তিনটা খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের সুযোগ রয়ে গেছে।’

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। কৃষি নির্ভর দেশ হওয়ায় এই খাতকে ব্যবহারের বিশেষ সুযোগ রয়েছে। কারণ অনেক দেশই তাদের প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য অন্য দেশ থেকে আমদানি করে। এখানে যদি সেই চাহিদাকে অ্যাড্রেস করা যায়, তাহলে এটিও রপ্তানির জন্য বিশাল খাত হয়ে উঠতে পারে।

সেজন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে এই খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরতে হবে।

৭. তেল, গ্যাস ও সমুদ্র অর্থনীতি:

সমুদ্রে ও তলদেশে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদ আহরণের নীতি নিয়েছে বাংলাদেশ যাকে বলা হয় 'ব্লু ইকোনমি' বা সমুদ্র সম্পদ নির্ভর অর্থনীতি।

বাংলাদেশ প্রায় পাঁচ বছর আগে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে বিবাদ মিটিয়ে বিশাল সমুদ্রসীমা, অর্থনৈতিক অঞ্চল পেলেও এখনো সেটার পুরোপুরি ব্যবহার শুরু করতে পারেনি।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের সমুদ্রে বহুদিন আগে থেকেই অনুসন্ধান, সম্পদ আহরণ শুরু করলেও আমাদের ক্ষেত্রে বলা যায় যে, গতকাল থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। এটাকে আমরা অনেকদিন অবহেলা করেছি, এখন হয়তো কিছুটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, কিন্তু আমদানি লবির সুবিধার কারণে এটাকে এতদিন সামনে আনা হয়নি। কিন্তু এখানে বিশেষ করে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে সমুদ্রে মৎস্য সম্পদ আহরণেও বাণিজ্যিক খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বিবিসি বাংলাকে বলছেন, গ্যাস, কয়লার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এখানে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেক দিন ধরেই আকৃষ্ট করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগে চ্যালেঞ্জ ও সুবিধা কতটা?

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন, অন্য অনেক দেশের তুলনায় এই দেশে ব্যবসা করা অনেক চ্যালেঞ্জিং।

ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির বলছেন, ‘বাংলাদেশে অপার সম্ভাবনা থাকলেও আমাদের একটা সমস্যা হলো, ট্যাক্সেশনসহ রেগুলেটরি ও পলিসি সাইডে কিছু অনিশ্চয়তা থাকে। যখন কোন বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে আসে, তখন তাদের একটা বিজনেস প্ল্যান থাকে। তখন তাদের যে প্রণোদনা দেয়া হয়, তখন যে কাঠামো থাকে, এক দুই বছর পর দেখা যায়, সেটা চেঞ্জ হয়ে যায়। তখন তাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়।’

‘বাস্তবে আমরা দেখেছি, অনেক বিনিয়োগকারী এটার জন্য তাদের পুনর্বিনিয়োগ স্থগিত করেছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ,’ তিনি বলছেন।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সর্বশেষ বিনিয়োগের পরিবেশ সংক্রান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং সীমিত অর্থায়নের সুযোগের মত বেশ কিছু কারণ বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। তবে বাংলাদেশের সরকার বলছে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকলেও, সেসব সমস্যা সমাধানে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, একটা সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটা উদ্বেগ ছিল নিষ্কণ্টক জমি নিয়ে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো তৈরি করার কারণে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিন্তু এখনো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পাওয়া, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা, বিরোধ নিষ্পত্তি নিয়ে জটিলতা- ইত্যাদি কারণে এখনো বিনিয়োগ পরিবেশের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে।

‘যেসব উপাদান বা সেবা থাকলে আদর্শ ব্যবসা পরিবেশ আছে বলে বলা যাবে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেটার ঘাটতি এখনো আছে। ফলে ব্যবসা খরচ বেড়ে যায়, যার মধ্যে আছে ট্রান্সপোর্ট থেকে শুরু করে লজিস্টিকস, জ্বালানি। ব্যবসার পরিবেশের উন্নতির জন্য আমাদের আরও গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করা দরকার,’ বলছেন তিনি।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘এখন আর বিদেশি বিনিয়োগে কোন চ্যালেঞ্জ নেই। বিচ্ছিন্নভাবে তো বলতে হবে না। আমরা বেশিরভাগ সেবাই ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে পারছি। সবাই তো হ্যাপি। গত চারমাসে ৪১ জন রাষ্ট্রদূত এসেছে, সবাই তো প্রশংসা করেছে, নেগেটিভ তো কেউ বলে নাই।’

‘দেশে বিজনেস বান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবাইকে নির্দেশ দেয়া আছে, সবাই সেভাবে কাজ করছে,’ তিনি বলছেন।

বাংলাদেশে যে বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন, তারা বলছেন, আগের তুলনায় ব্যবসা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এই খাতে ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু করা দরকার। সেটা হলে দীর্ঘসূত্রিতা এবং অস্বচ্ছতা কমে যায়। আগের চেয়ে অনেকগুলো ধাপ কমেছে, তবে আরও কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে।

এফআইসিসিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির বলছেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে শুধু আমরা বললেই হবে না। বর্তমানে যে বিনিয়োগকারীরা রয়েছে, তাদের দিয়ে যদি বিশ্বের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা এবং মনোভাব শেয়ার করা যায়, তাহলে নতুন বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হবে।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh