নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩২ পিএম | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভ খানের জুয়েলার্সের দোকান উদ্বোধন করেন তারকা
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। শুধু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় না, আরাভ খানের বাসাতেও গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব।
বুধবার (১৫ মার্চ) রাত আটটায় জমকালো আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আরাভ
জুয়েলার্সের উদ্বোধনে বাংলাদেশ থেকে আরও অংশ নেন নির্মাতা-উপস্থাপক দেবাশীষ
বিশ্বাস, চিত্রনায়িকা দীঘি, হিরো আলমসহ আরও অনেকে।
তবে, আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনের খবর গণমাধ্যমে আসার
পর জানা যায়, দুবাইয়ের আরাভ
খান নামের এই স্বর্ণ ব্যবসায়ী মূলত বাংলাদেশে পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার আসামি
রবিউল ইসলাম। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা ওই জুয়েলারির দোকান উদ্বোধনে গেছেন তাদের
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)তে তদন্তের স্বার্থে
প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিবি প্রধান হারুন
অর রশীদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, স্বর্ণের দোকানের
মালিক আরাভ খান পুলিশ খুনের আসামি বিষয়টি জানানো হয়েছিল সাকিবকে। কিন্তু তিনি
দুবাইয়ে কেন গেলেন। এটি দুঃখজনক। তদন্তের স্বার্থে সাকিব ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ
করা হতে পারে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমরা এ হত্যা
মামলার তদন্ত করে চার্জশিটও দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে
ইন্টারপোলের মাধ্যমে আসামি আরাভ খানকে কিভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় দেখা হচ্ছে। এ
ছাড়া সাকিবদের অবগত করার পরও মার্ডার মামলার আসামি আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান
উদ্বোধনে কেন গেল তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে তাদের দেশে ফেরার পর ডেকে জানতে চাওয়া
হবে।
আরাভ খান ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) স্কুল অব ইন্টেলিজেন্স পরিদর্শক
মামুন ইমরান খানকে (৩৪) পুড়িয়ে হত্যা মামলার ৬ নম্বর পলাতক আসামি।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমাদের পুলিশের একজন মেধাবী কর্মকর্তা ছিলেন
পরিদর্শক মামুন। তাকে শুধু হত্যাই করেনি। তার লাশটি যেন না পাওয়া যায় তাই
কালীগঞ্জের জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনার পর মামলা হয়। এরপর ডিবি তদন্ত করেছে।
আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম পালিয়ে গেলেও নকল একজন আসামি জেলখানায় দেয়
সে। পরে ডিবির তদন্তে নকল আসামির ঘটনা সামনে আসে। এরমধ্যে মূল আসামি দুবাইয়ে
স্বর্ণের দোকানের মালিক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভারতে পালিয়ে যায়। সেখানে তিনি
ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই যান।
আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি, সে একজন মেধাবী
পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছে। মিডিয়াতে অনেকের বলার পরেও সাকিবসহ অন্যান্য স্টার
খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন। তার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনে যোগ
দিয়েছেন।
তার নামে এখন পর্যন্ত কতগুলো মামলার অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে হারুন-অর-রশীদ
বলেন, আসামির নামে এখন পর্যন্ত ১২টি ওয়ারেন্ট রয়েছে।
মামলা রয়েছে, চার্জশিট রয়েছে তার নামে।
আরাভ খানই রবিউল ডিবি কখন নিশ্চিত হয়েছে, এমন প্রশ্নের
জবাবে তিনি বলেন, যখন কোনো মামলার চার্জশিট দেওয়া হয় তখন সব
আসামিরা কে কোথায় আছে তা খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। আরাভ খানের বিভিন্ন ছবি প্রকাশ হয় এবং
সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ও ফেসবুকে ওই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের বিজ্ঞাপন
দিচ্ছিলেন। সবকিছু মিলেই আমরা তথ্য পাই আরাভ খানই পুলিশ খুনের মামলার আসামি রবিউল
ইসলাম।
ডিবিপ্রধান বলেন, খুনের পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ধারণ করেন
রবিউল ইসলাম। ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে সে এখন দুবাইতে অবস্থান করছে।