ভরসা হয়ে উঠছেন নাজমুল হোসেন শান্ত

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৬ পিএম | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম

নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: সংগৃহীত

নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: সংগৃহীত

সৌম্য সরকার, লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত- এই তিনজনের মধ্যে একটা জায়গায় দারুণ মিল রয়েছে। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে না পারায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন তারা। লিটন, শান্ত জাতীয় দলে নিয়মিত হলেও সৌম্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছেন।

সদ্যই বিদায় নেওয়া জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকেও শান্তর কারণে সমালোচকরা কটু কথা বলতে ছাড়েননি। ফেসবুকে এহেন কথা নেই যা শান্তকে নিয়ে বলা হয়নি। যদিও এসব বিষয় নিয়ে খুব বেশি গা করেননি অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের সাবেক এই সহ-অধিনায়ক। সেই শান্তই এখন দলের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠছেন। 

সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলের নবম আসরে বেশ কজন তরুণ ক্রিকেটার নজর কেড়েছেন, তাদের মধ্যে সবার আগের নামটি তৌহিদ হৃদয়, যিনি এই বিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়ে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। নানা সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হওয়া শান্ত দারুণ ধারাবাহিকতায় নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন। জাতীয় দলের এই ওপেনারকে কেন এত সুযোগ দেওয়া হয়, সমালোচকদের এটি ছিল একটি কমন প্রশ্ন। শান্ত দারুণ ধারাবাহিকতায় প্রশ্নের জবাব তো দিয়েছেন।

পাশাপাশি বিপিএলের রেকর্ড বইয়েও নাম লিখিয়েছেন নতুন করে। ৯টি বিপিএলে শান্ত হলেন একমাত্র বাংলাদেশি যিনি ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো রংপুর রাইডার্সের হয়ে ২০১৯ সালে ৫০০ রান করে সবার ওপরে ছিলেন। গত ডিসেম্বরে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এই বাঁহাতি ব্যাটার আউট হওয়ার পর গ্যালারির গর্জন দেখে যে কারও মনে হতে পারত, এই বুঝি রোহিত শর্মা না হলে বিরাট কোহলি আউট হয়েছেন!ৎ

একই স্টেডিয়াম না হলেও গল্পটা যে এই গ্যালারিরই। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একই দৃশ্যের মঞ্চায়ন হলো। প্রথমবারের মতো ইংলিশদের বধ করার এই নায়ক যখন সংবাদ সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করছিলেন গ্যালারি থেকে তখন ভেসে আসছিল, ‘ওয়েল ডান শান্ত।’ 

শান্তর দুর্দান্ত এক ইনিংসেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি জেতার পর প্রথম কুড়ি ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ১৫৭ রান। উইকেট কিছুটা মন্থর হলেও সাকিবের দল বুঝেশুনে ব্যাট করে গেছে। কিছু বল থেমে থেমেও আসছিল, আর তাই রান তাড়া করাটা সহজ ছিল না বাংলাদেশের।

সেখানে শান্তর ২৭ বলে ফিফটি এবং ৩০ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। লক্ষ্যটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। এর মধ্যে মার্ক উডের টানা ৪ বলে ৪টি চার মেরে নিজে যে কতটা প্রস্তুতি নিয়ে এই সিরিজ খেলতে এসেছেন সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। 

শান্তর ব্যাট হাসছে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে। তবে সেই আসরে ধীর গতির ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা শুনেছেন। সমালোচনা হয়েছে বিপিএলেও তার ব্যাট করা নিয়ে। দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে সবকিছুর জবাবও দিয়েছেন। এরপর প্রশ্ন উঠেছিল, শান্তর স্ট্রাইক রেট নিয়ে।

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, বিপিএলের খেলাটাই যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়ে আসেন তার শিষ্যরা। শান্তও কোচের কথার সুরে বলেছে, ‘বিপিএলে আমরা যেভাবে ব্যাট করেছি, যে মন-মানসিকতা ছিল প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। সেভাবে ব্যাট করেছে সবাই, ভিন্ন কিছু কেউই করতে চায়নি। এখন ব্যাটাররা অনেক স্বাধীনতা নিয়ে খেলছে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh