এমপির সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম

পুলিশের সামনে ধারালো অস্ত্র হাতে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলাকারীদের কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের সামনে ধারালো অস্ত্র হাতে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলাকারীদের কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এসময় আ স ম ফিরোজের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। তার বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে জখম রয়েছে। পা ও মাথায় আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, তিনটি পক্ষই একই সময়ে কর্মসূচির ডাক দেয়। এর মধ্যে আ স ম ফিরোজ এবং আবদুল মোতালেব হাওলাদারের পক্ষের কর্মসূচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে (জনতা ভবন) এবং বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক ওরফে জুয়েলের পক্ষের কর্মসূচি বাউফল প্রেসক্লাব সড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ আরেকাংশের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

তিনটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছিলেন সমর্থকেরা। বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি কলেজ মাঠে, আ স ম ফিরোজের পক্ষের সমর্থকেরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও আবদুল মোতালেবের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হন।

আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে আনন্দ র‍্যালি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (জনতা ভবন) দিকে যাচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এতে বাধা দেয়। তখন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আবদুল মোতালেবের কথা-কাটাকাটি হয়। অপর পাশেই লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের সমর্থকেরা। তখন আ স ম ফিরোজ ছাদখোলা একটি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

একপর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকেরা দলীয় ও নিজ নিজ নেতার নামে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এসময় আবদুল মোতালেবের ওপর হামলা চালান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ধারালো অস্ত্রধারী সমর্থকেরা। তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। থামাতে গিয়ে আহত হন আবদুল মোতালেবের কর্মী রাব্বি (৩০), মো. হাসান (২৬), মো. হাসিব (৩২), মো. খোকা মিয়াসহ (৫০) অন্তত ১০ জন।

এরপর আবদুল মোতালেবের সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে ওসি আল মামুন, উপপরিদর্শক (এসআই) এম এ হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন, কনস্টেবল মো. আবু রাহাত ও মো. রবিউলসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয় জানিয়ে ওসি আল মামুন বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh