টেকনাফে অপহৃত ৭ জনকে পাহাড় থেকে উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ১০:০৫ পিএম

টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত

টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চল। ছবি: সংগৃহীত

টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চলে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে অপহৃত ৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার জাহাজপুরার একটি পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে ৯ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। এরপর মোহাম্মদ আমির (১১) ও রিফাত উল্লাহ (১২) নামের ২ জনকে ছেড়ে দিলেও জিম্মি করে রাখা হয় ৭ জনকে।

উদ্ধার হওয়া ৭ জন হলেন- জাহাজপুরা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন (১৭), ফজল করিম (৩৮), জাবেরুল ইসলাম (৩৫), আরিফ উল্লাহ (২২), মোহাম্মদ রশিদ (২৮), মোহাম্মদ জাফর (৩৮), মোহাম্মদ জয়নুল (৪৫), মোহাম্মদ আমির (৩২) ও আরিফ উল্লাহ (২২)।

অপহরণের পরপরই বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও স্বজনরা জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা দলবেঁধে পাহাড়ে ভেতরে কাঠ সংগ্রহ করতে গেলে  মুখোশধারী ও অস্ত্রধারী ১৫-২০ জন তাদেরকে ঘিরে ফেলে। পরে অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করা হয়।

টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি কয়েকটি দল অভিযান শুরু করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে পাহাড়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে সহযোগিতা করেন। পরে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পাহাড়ে জিম্মি করা ৭ জনকে রেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর তাদের উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান জানান, লাকড়ি সংগ্রহ ও শন কাটার সময় তারা অপহরণের শিকার হন। ওই ৭ জনের মধ্যে একজন কলেজ ছাত্র।

তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিকভাবে ওই ছাত্র লাকড়ি সংগ্রহে যাওয়ার কথা না। তাছাড়া পাহাড়ে একই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে, তাহলে কেন তারা পাহাড়ে গিয়ে ছিলেন বিষয়টি পরিষ্কার না। ফলে পুরো ঘটনা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন জানান, উদ্ধার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে। এরূপ অপহরণের ঘটনা নিয়ে নানা সন্দেহ রয়েছে। এটা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সারা দিন অপহৃতদের স্বজনদের সাথে আলাপ করার চেষ্টা করলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, গত ৬ মাসে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ৪১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা হলেও ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা।

যেখানে ২২ জন মুক্তিপনের টাকা দিয়ে ফেরত আসার তথ্য জানিয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ ২ শিশু অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসে।

এছাড়া গত ২১ জানুয়ারি হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়ক পাহাড়ি ঢালার ভেতর থেকে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

এদিকে এধরনের ঘটনার সাথে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসা, আল ইয়াকিন ও আরএসওসহ স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ স্থানীয়দের।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh