নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৩, ১১:০৮ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে ভেতরে-ভেতরে সরকারের নেগোসিয়েশনের (সমঝোতা) গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, কেউ বলেন ৬০ থেকে ৭০ আসন; কেউ বলেন ৮০ আসনের কথা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে। কারা ছড়ায় এই গুজব? আসন দেওয়ার মালিক তো জনগণ।
আজ রবিবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে ‘কর্তৃত্ববাদের উত্থান ও বিপন্ন গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে কিসের আলোচনা হবে? নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রথম ধাপ নির্বাচনের পরিবেশ, আইনের শাসনের মতো পূর্বশর্তগুলো অনুপস্থিত। অথচ এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। কর্তৃত্ববাদের সহায়ক শক্তিদের লুট করার সুযোগ দিতে হয়। এই লুটের সিন্ডিকেটের কারণেই ডলার নেই, ব্যাংকে টাকা নেই।
সুশাসনের জন্য যা দরকার, তার কোনোটিই দেশে উপস্থিত নেই বলে মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক দিলারা চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের কাঠামোকে ভেঙে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। কিছু বললেই তারা হাতা গুটিয়ে মারতে আসে, রাজাকার-স্বাধীনতার বিরোধীপক্ষ বলে চিহ্নিত করে। দেশ অসীম সংকটের মুখে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন মুক্তির পথ খুলে দিতে পারে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তাতে বলা হয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিফেন ওয়াল্টের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে যা চলছে, তা কর্তৃত্ববাদ। কর্তৃত্ববাদী শাসনের ১০টি লক্ষণ রয়েছে।
সেগুলো হচ্ছে ভীতি বা উৎকোচের মাধ্যমে তথ্যব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, তাঁবেদার তথ্যব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, প্রশাসন ও নিরাপত্তাব্যবস্থার দলীয়করণ, নিজ স্বার্থে নির্বাচনব্যবস্থায় জালিয়াতি, বিরোধী রাজনীতিকদের ওপর নজরদারির জন্য গোয়েন্দা সংস্থার ব্যবহার, অনুগত ব্যবসায়ীদের পুরস্কার ও অবাধ্য ব্যবসায়ীদের শাস্তি, বিচারব্যবস্থা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা, শুধু এক পক্ষের ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ, ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানো এবং বিরোধী রাজনীতিকদের সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার। বাংলাদেশের বর্তমান শাসনব্যবস্থার সঙ্গে এই লক্ষণগুলো মিলে যাচ্ছে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন জিয়া পরিষদের নেতারা।