চট্টগ্রামের উন্নয়ন পরিকল্পনা বিনিয়োগ না বোঝা

প্রতীক সিফাত

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩৭ এএম

কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। ছবি: সংগৃহীত

কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার আগামীর বিজনেস হাব হিসেবে চট্টগ্রামকে প্রস্তুত করতে চায় সরকার। তাই গত এক দশকে কয়েক লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূল ধরে একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর (মিরসরাই ইকোনমিক জোন), এলএনজি টার্মিনাল, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অনেক কিছুই নির্মাণ করা হচ্ছে।

তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, তারল্য ও অবকাঠামোগত সংকট এসব বিনিয়োগের সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখনই উদ্যোগ না নিলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের এসব উন্নয়ন পরিকল্পনা অর্থনৈতিক সুফল আনার পরিবর্তে বোঝা হয়ে উঠবে।

সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন ভিশনের অনেকটাই দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল ঘিরে। সমুদ্র তীরবর্তী লজিস্টিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে জ্বালানি আমদানি ও উৎপাদনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণই মূল লক্ষ্য। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী ও মহেশখালীতে পাওয়ার অ্যান্ড লজিস্টিক হাব হিসেবে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে সরকার।

গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, দীর্ঘমেয়াদি বর্তমানের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সক্ষমতার এলএনজি টার্মিনালসহ একাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু করেছে। শুধু মাতারবাড়ীতে বিনিয়োগ হয়েছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাংলাদেশে অতীতের অভিজ্ঞতায় এসব বিনিয়োগের সহ-উন্নয়ন পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন না হলে মেগা বিনিয়োগগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে যাবে।  

দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলকে নিয়ে একটি বিশেষ গবেষণা করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। ‘প্রিপারেটরি সার্ভে অন সাউদার্ন চট্টগ্রাম রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক এ গবেষণায় বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভার বর্তমান সক্ষমতা, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধার প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো উঠে আসে। শিল্পাঞ্চলগুলো বাস্তবায়নের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ নগর উন্নয়ন ও সুবিধা না বাড়লে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মেগা এসব প্রকল্প সংকটে পড়ার চিত্র উঠে আসে এ প্রতিবেদনে। 

চট্টগ্রামের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে ঘিরে মূলত তিনটি দিক বিবেচনা করছে সরকার। এগুলো হলো লজিস্টিক হাব, পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি হাব ও ওয়াটার ফ্রন্ট ইন্ডাস্ট্রি হাব। এ তিন প্রেক্ষাপটে সরকারের অর্থনৈতিক বিনিয়োগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হলেও এসব শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করবে কিনা সে প্রশ্নটি জাইকার প্রতিবেদনে উঠে আসে। সরকারের সমুদ্র উপকূলীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলোকে ঘিরে সেখানে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কী কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে সেসব বিষয়ও উঠে আসে জরিপে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, চট্টগ্রামের ১২টি শিল্পাঞ্চলের মধ্যে সরকারি অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বেসরকারি উদ্যোগে কর্ণফুলী ড্রাইডক স্পেশাল ইকোনমিক জোন স্থাপন কাজ চলমান আছে। এছাড়া সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড ও কোরিয়ান ইপিজেডের কার্যক্রম চলমান থাকলেও বাদবাকি আনোয়ারা ইকোনমিক জোন, আনোয়ারা-২ ইকোনমিক জোন, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ ও কাজী ফার্মস ইকোনমিক জোনের পরিকল্পনায় আছে।

অপরদিকে কক্সবাজারের সাবরাং ও নাফ টুরিজম পার্ক, মহেশখালীতে কক্সবাজার স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন-৩ (ধলঘাটা) ও মহেশখালী  স্পেশাল ইকোনমিক জোনের (ঘাটিভাঙা) নির্মাণকাজ চলমান। যদিও মহেশখালী স্পেশাল ইকোনমিক জোন (ঘাটিভাঙা-সোনাদিয়া), মহেশখালী ইকোনমিক জোন (কালারমারছড়া), মহেশখালী ইকোনমিক জোন-১, মহেশখালী ইকোনমিক জোন-২-এর (কালারমারছড়া) নির্মাণ পরিকল্পনাধীন।

কার্যক্রম চালু থাকা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলো মেট্রোপলিটন এলাকায় হওয়ায় অবকাঠামোগত সুবিধা পেয়ে আসছে। কিন্তু দক্ষিণ চট্টগ্রামে (কক্সবাজারসহ) সরকারের নেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ গভীর সমুদ্র বন্দর, একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারী ছাড়াও প্রকল্প পরিচালনায় সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেভাবে প্রস্তুত নয় স্থানীয় প্রশাসন।

ফলে মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন শেষে কার্যক্রম শুরু হলে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়বে প্রকল্প পরিচালনাকারী সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো। শিল্পাঞ্চলকে ঘিরে যথাযথ সামাজিক ও নাগরিক সেবা উন্নয়ন না হলে বড় বিনিয়োগগুলো পজিটিভ ইমপ্যাক্টের পরিবর্তে বোঝা হয়ে ওঠার ঝুঁকিও রয়েছে। 

দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সবচয়ে বড় ঝুঁকি রয়েছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। প্রায় সব বিনিয়োগই হচ্ছে বিদেশি ঋণ সহায়তায়। বড় বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পর প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা দেয়া না গেলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও মুখ থুবড়ে পড়বে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ রয়েছে উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই শিল্প জোন ও সাম্প্রতিক নির্মাণাধীন মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর।

এ অঞ্চলে নানামুখী ভারী শিল্প থাকলেও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা মান্ধাতা আমলের। সরকারিভাবে এখনো পানি সুবিধা না পেয়ে শিল্পদ্যোক্তারা ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ অনিশ্চয়তায় অনেক দেশীয় শিল্প কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে।

নিজস্ব গ্যাসের মজুদ কমে আসায় এলএনজি আমদানির মাধ্যমে শিল্প খাতকে টিকিয়ে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হলেও চাহিদা অনুযায়ী এখনো সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি। ফলে বিদ্যমান শিল্প খাত যেখানে বড় ধরনের সংকট পার করছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পায়নে এর প্রভাব কতটুকু পড়বে সে বিষয়ে সরকারিভাবে পরিকল্পনা নেই। 

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট, বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রধান ফরেন কারেন্সি ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম ও ডলার সংকট বিনিয়োগের গতিকে অনেক বেশি শ্লথ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো মূলধনী যন্ত্রপাতি, অবকাঠামো নির্মাণ উপকরণের কাঁচামাল এমনকি অতি নিত্যপণ্য আমদানির জন্যও ঋণপত্র (এলসি) দিতে পারছে না। মৌসুমভিত্তিক চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানিতে এলসি সহজীকরণে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে কিছুদিন পরপর।

এ ধরনের সংকট দীর্ঘমেয়াদে থাকলে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। যেটুকু বিনিয়োগ হচ্ছে সেগুলো দেশীয় উদ্যোক্তারা টিকে থাকার প্রয়োজনে করে যাচ্ছেন। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আনুষঙ্গিক সংকট সমাধান ও সহযোগী আর্থ-সামাজিক খাতের বিনিয়োগ যথাযথ করতে হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। 

বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে দেশব্যাপী শিল্পাঞ্চলসহ নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মেগা প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের দক্ষিণ অংশে। বিদ্যুৎ, বন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের একাধিক কাজ শুরু হলেও এসব প্রকল্পের সফলতা নির্ভর করছে যথাযথ অবকাঠামো উন্নয়ন, নাগরিক সুবিধাপ্রাপ্তির উপর। উন্নয়নের প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে ধীরগতির কারণে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এসব উন্নয়নযজ্ঞ।  

চট্টগ্রাম জেলাকে ঘিরে চলমান অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজি), বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজি) ও রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) জন্য প্রয়োজনীয় একাধিক অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ ছাড়াও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারীর থাকার আবাসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, পানি সরবরাহের জন্য মেগা একাধিক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

তবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চল অর্থাৎ আনোয়ারা উপজেলা, পটিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া এবং কক্সবাজারের মহেশখালী, মাতারবাড়ী, উখিয়া, টেকনাফকে ঘিরে মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান থাকলেও নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত এসব এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের গতি খুবই নগণ্য। মেগা প্রকল্পগুলোকে ঘিরে আসন্ন পপুলেশন গ্রোথের সঙ্গে সামজ্ঞস্যপূর্ণ উন্নয়ন না হলে রিটার্নও আশানুরূপ হবে না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।  

জাইকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেবল কক্সবাজারে ২০২৬ সাল নাগাদ জনসংখ্যা বাড়বে ৪০ হাজার, ২০৪১ সালে বাড়বে ১ লাখ ১০ হাজার। এছাড়াও ২০১৭ সালের জুলাইয়ে কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে ৯ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের বর্ধিত জনসংখ্যার সঙ্গে আরও কয়েক লাখ শ্রমিক কর্মচারী যুক্ত হবে এ অঞ্চলের জনসংখ্যার সঙ্গে, যা বর্তমান অবকাঠামো ও নাগরিক সুবিধার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না।

এ জন্য সড়ক ও সেতু নির্মাণ, ড্রেইনেজ অবকাঠামো সংস্কার ও নির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন, আধুনিক বর্জ্য ও পয়োঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা (স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় সাইক্লোন শেল্টার ও  আবাসন) বাড়াতে হবে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণকাজ শুরু হলেও এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সহযোগী প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার পিছিয়ে রয়েছে। বিশেষত পৌরসভা, উপজেলা সদরের সরকারি স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন সওজ, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গণপূর্ত বিভাগ এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়বে চকরিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা। এর আগে শুধু কৃষি ও মৎস্য আহরণের উপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলে নতুন করে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় এর ভার নিতে সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, শিল্পায়ন ও শিল্পের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ থাকে না। এজন্য সরকারের সবগুলো সংস্থার সমন্বয়ে যৌথ মেগা পরিকল্পনা ও এর বাস্তবায়ন না হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে ঘিরে সরকারের কয়েক লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রিটার্ন আনবে না। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি সবগুলো সংস্থার মাধ্যমে সুষম বিনিয়োগ ও অবকাঠামোগত প্রকল্পের সমন্বয় জরুরি।’ 

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফজলুল্লাহ বলেন, ‘চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই অঞ্চলের শিল্প এলাকার জন্য পানির সংকট তীব্র। এ জন্য আমরা একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছি। মিরসরাই ইকোনমিক জোনের কার্যক্রম শুরুর দ্বারপ্রান্তে এসে গেলেও এখনো প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়নি।

চট্টগ্রাম শহর কিংবা এ অঞ্চলের জন্য পানির দৈনিক চাহিদা ৩ কোটি লিটার হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসার বিদ্যমান ও চলমান প্রকল্পগুলো থেকে দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহ সম্ভব হবে। এ সক্ষমতা দিয়ে আরও অন্তত ১০ বছর চাহিদা অনুপাতে পানি সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে। তবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলের জন্য নতুন নতুন আরও পানির সংস্থান করতে হবে।’ সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ওয়াসার পাশাপাশি অন্য কোনো সংস্থা গঠন জরুরি বলে তিনি মনে করেন। 

বেজার চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন অবশ্য বলছেন, ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়নের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও নানামুখী অবকাঠামো নির্মাণে ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হলেও শিল্প স্থাপনের কাজ হবে ধারাবাহিকভাবে।

ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও এক সঙ্গে কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চলই শতভাগ উৎপাদনে যাবে না। যার জন্য ধীরে হলেও প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াও আবাসন, চিকিৎসা, শিক্ষা ছাড়াও সামাজিক উন্নয়নের প্রকল্প বাস্তবায়নে বেজা কাজ করছে।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh