বিশৃঙ্খল গণপরিবহন

প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০:২৬ এএম | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১১:০৩ এএম

সম্পাদকীয়। ফাইল ছবি

সম্পাদকীয়। ফাইল ছবি

দেশের গণপরিবহনে নৈরাজ্য বহুদিনের। এ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা মত দেন, পরিবহনে নগদ লেনদেন বন্ধ করা গেলে এ খাতের মানোন্নয়ন করা সম্ভব। ফলে সড়কে অনিয়ম ঠেকানো, সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ ও সড়ক দুর্ঘটনা নির্মূলসহ বিভিন্ন ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে রাজধানী ঢাকায় ই-টিকিটিং চালু করা হয়।

প্রথম পর্বে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মিরপুর রুটে ৩০টি কোম্পানির ১৬৪৩টি বাসে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় পর্বে ১৬টি কোম্পানির ৭১৭টি গাড়িতে এবং তৃতীয় পর্বে ১ মার্চ থেকে আরও ১৩টি পরিবহন কোম্পানির ৯৪৭টি বাস ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে যাত্রী পরিবহন করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো এরপরও ঢাকার গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলা বন্ধ হয়নি। বরং ভাড়া নিয়ে এখনো চলছে নানা অভিযোগ। 

এখনো ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। টিকিট দিতে উদাসীন অনেক কন্ডাক্টর ইচ্ছা করে বাসের দরজা থেকে ভেতরে আসেন না। ফলে নামার সময় তাড়াহুড়ো করে টাকা রেখে দেন, কিন্তু টিকিট দেন না। আবার যাত্রীদের অভিযোগ, ই-টিকিটিংয়ের ডিভাইসটিতে দূরত্ব অনুযায়ী কিলোমিটার উল্লেখ নেই।

এই পদ্ধতিতে প্রকৃত কিলোমিটার হিসাবে কয়েক স্টপেজের যাত্রীদের ন্যায্য ভাড়া নিশ্চিত হয়েছে। তবে প্রতিটি রুটে বেশিরভাগ যাত্রীকে আগের মতোই বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। কারণ তাদেরকে নিজ গন্তব্যের বাইরে ন্যূনতম ২/৩ স্টপেজের ভাড়াসহ দিতে হচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ অনেক যাত্রী টিকিট কাটতে অনীহা দেখান।

আবার ই-টিকিটিং বা ইলেকট্রনিক টিকিটিং ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য একই ভাড়া হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যায়, একই দূরত্বে বিভিন্ন কোম্পানির ভাড়া ভিন্ন ভিন্ন। জানা যায়, চালু হওয়া এসব ই-টিকিটিং ব্যবস্থা কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে, ভাড়া নির্ধারণ প্রক্রিয়া কিংবা এ ব্যবস্থার অনিয়ম তদারকি ও ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে না বিআরটিএ।

গত বছর জ্বালানির দাম বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে কয়েক দফায় বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যার জের এখনো সাধারণ যাত্রীকেই টানতে হচ্ছে। এরপর জ্বালানির বর্ধিত দাম লিটারপ্রতি ৫ টাকা করে কমানো হলেও, বাস ভাড়া কমানো হয়নি। সেই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, সড়কের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা বেশি, অদক্ষ ও অশিক্ষিত চালক-হেলপার, যত্রতত্র গাড়ি থামানো ও যাত্রী ওঠা-নামা ইত্যাদি নানা সমস্যা তো রয়েছেই।

এই সব সমস্যা সত্ত্বেও বলা হচ্ছে ই-টিকিটিংয়ে বাসের ভাড়া কিছুটা কমেছে। যদিও সড়ক বা বাসের ভেতর শৃঙ্খলা ফেরেনি। এজন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ। জনস্বার্থে প্রশাসনকেও কঠোর হতে হবে। নিজ দায়িত্ব পালনে তারা যদি সচেষ্ট হয় এবং বিষয়গুলো আমলে নিয়ে গণপরিবহনকে নিয়মিত নজরদারি এবং অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা রাখে, তাহলেই শৃঙ্খলায় ফিরবে আমাদের গণপরিবহন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh