নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম
রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: সংগৃহীত
২০২৩ সালে রোহিঙ্গা সহায়তার ক্ষেত্রে আর্থিক সঙ্কটের আশঙ্কা করেছে জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যালয়ের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস উত্থাপন করেছেন।
প্রতিবেদনে ২০২২ সালকে বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বছর হিসেবে অভিহিত করা হয়। এতে বলা হয়, ইউক্রেন অঞ্চলে যুদ্ধের উপর্যুপরি প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারির ক্রমাগত আঘাতে উদ্ভূত জ্বালানি ও খাদ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেশীয় মুদ্রাস্ফীতি উস্কে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নের অগ্রগতিকে স্তিমিত করে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব একটি সতত বিরাজমান বাস্তবতা, যার প্রভাবে সংঘটিত হচ্ছে দুর্যোগময় বন্যা এবং মিয়ানমারে বিরোধ পঞ্চম বছরের মতো গড়ানোর মধ্য দিয়ে এ দেশটি প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে।
২০২২ সালের চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ সত্ত্বেও জাতিসংঘ এই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা জোরদার করার পাশাপাশি বেশ কতগুলো ধারাবাহিক উদ্যোগ ও সেবা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে সহায়তা দেয়া অব্যাহত রেখেছে। খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি, শিক্ষা, শিশু সুরক্ষা, জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতায় বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য সহায়তা, নিরাপদ, বৈধ ও নিয়মিত অভিবাসন, সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রগুলো জোরদার করার প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ কার্যালয় বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার পাশাপাশি জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়গুলোতে সহায়তা দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ উন্নয়নচ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রয়াস পরিচালনায় সুষ্ঠুভাবে কাজ করেছে।
জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক (ইউএনএসডিসিএফ) ২০২২-২০২৬ বাস্তবায়নের প্রথম বছরে এদেশে পরিচালিত জাতিসংঘের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসেছে লাখ লাখ মানুষ এবং হাজার হাজার মানুষ এসব উদ্যোগের ফলে প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশস্থ জাতিসংঘ কার্যালয় জলবায়ু প্রভাবের কারণে সৃষ্ট দেশের বিভিন্ন সংকট মোকাবেলার লক্ষ্যে সরকারকে সহায়তা দেয়ার জন্যও কাজ করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পঞ্চম বছরের মতো বাংলাদেশ মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাস হতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য উদারভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থাকরার জন্য বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এই সংকট মোকাবেলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ আর্থিকও পরিবেশগত উভয় ধরনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে; শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত, সম্মানজনক, নিরাপদ ও টেকসইপ্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী প্রয়াস আবশ্যক। বাংলাদেশ সরকারের সাথে মিলিতভাবে জাতিসংঘ ও আমাদের মানবিক সহায়তা অংশীদাররা বাংলাদেশে নিবন্ধিত আনুমানিক ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩০৯ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সহায়তার লক্ষ্যে কাজ করার পাশাপাশি তাদের জন্য একটি বাস্তবসম্মত দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খোঁজার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।