বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:০০ পিএম | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম
ফাইল ছবি
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ১২ জুন। তবে নির্বাচনের অফিসিয়াল তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনো। তার আগেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে কমিশন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাঠপর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তাদের রদবদল শুরু হয়েছে। বদলি করা হয়েছে বরিশাল জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তাকে। তাছাড়া বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে। আর বরিশাল আঞ্চলিক কর্মকর্তার দায়িত্বে যাচ্ছে খুলনা সিটির নির্বাচন।
যদিও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত কোন আদেশ পাননি বলে জানিয়েছেন বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে কমিশনের এমন পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন এই কর্মকর্তা।
এর আগে, গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে বরিশাল এবং খুলনাসহ পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করেন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৬ মে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ। এছাড়া বাছাই ১৮ মে এবং ২৫ মে’র মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আর নির্বাচন হবে ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নানা পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কমিশন। সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা, প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান কমিশনের সচিব।
এদিকে, বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, কমিশন থেকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেও শুক্রবার পর্যন্ত এ সংক্রান্ত অফিসিয়াল কোন চিঠি আসেনি আঞ্চলিক কার্যালয়ে। তাছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব কারা পাবেন সেই চিঠিও আসেনি।
তবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার একদিন পরেই বরিশাল জেলার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলমকে বরিশাল থেকে বদলি করে নির্বাচন সচিবালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার স্থলে বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সিকে। এই রদবদল নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রটি আরও জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হবেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। এছাড়া জেলা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার।
তবে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচনকালীন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ে রদবদলের পরিকল্পনা রয়েছে। একই দিন দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে খুলনা এবং খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে বরিশাল সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এর কারণ উল্লেখ করেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে যেসব কর্মকর্তা বরিশাল নির্বাচন কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তারা সবাই পুরানো। এদের সাথে স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভালো সক্ষতা গড়ে উঠেছে। যে কারণে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণেই নির্বাচনের আগে রদবদল হচ্ছে।
তবে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, সিটি নির্বাচনের দপ্তরিক কোন চিঠি এখনো আমরা পাইনি। তবে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ নিয়ে রাখছি। সম্ভাব্য ভোটার তালিকা এবং ভোটকেন্দ্রগুলো চূড়ান্ত করতে কাজ করছি। আপাতত খসরা ভোটার তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকায় ভোটার সংখ্যা এবং এবার কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়তে পারে। আশা করছি ১০-১২ দিনের মধ্যে এগুলো চূড়ান্ত হবে।
রদবদল প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের আলোচনা শুনেছি। তবে এখনো কোন চিঠি পাইনি। আর অফিসিয়াল আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু না বলাই ভালো উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাছাড়া আমাদের সবার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য একটাই, তা হলো জনগণ যেন শান্তিতে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারে এবং ভোট দিয়ে আবার শান্তিতে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন।