গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:০০ পিএম
শিশু সম্পূর্ণা। ছবি: গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় টাকার অভাবে থেমে গেছে ৫ বছরের শিশু কন্যা সম্পূর্ণা ব্রেনের চিকিৎসা। ব্রেনে পানি জমতে জমতে ইতিমধ্যে শিশুটির মাথার ওজন হয়েছে ৭ কেজি। জমানো ও জমি বিক্রি করা ৯ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করালেও একমাত্র মেয়েটি সুস্থ হয়নি। বর্তমানে টাকার অভাবে থেমে আছে শিশুকন্যা সম্পূর্ণা গাইনের চিকিৎসা।
পাঁচ বছরের শিশু কন্যা সম্পূর্ণা গাইনের বাবা মোহন গাইন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রহরী ও মা প্রজ্ঞা গাইন গৃহিণী। শিশুটিকে সুস্থ করতে পরিবারটির চেষ্টা যেন শেষই হচ্ছে না।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে সুস্থ শিশু হিসাবে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার লেবুতলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করে সম্পূর্ণা। মাত্র চার মাস বয়সে জ্বর হওয়ার পর থেকেই বড় হতে শুরু করে শিশুটির মাথা। দীর্ঘদিন এলাকায় চিকিৎসা করানোর পরও কোন উন্নতি হয়নি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে। সেখানে দুইটা অপারেশন করার পরও কোন লাভ হয়নি। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে ভারতে নিয়ে কয়েকমাস চিকিৎসা করালেও সম্পূর্ণার মাথার আকার কমেনি। পরে চিকিৎসকেরা জানায় অপারেশন মাধ্যমে শিশুটিকে সুস্থ করা সম্ভব কিন্তু খরচ হবে বাংলাদেশী দশ লাখ টাকা। কিন্তু শিশুটির জন্মের পর থেকে চিকিৎসার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৯ লাখ টাকা। বর্তমানে টাকা জোগার করতে না পাড়ায় থেমে আছে সম্পূর্ণার চিকিৎসা। তাই শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চেয়েছেন এলাকাবাসী ও স্বজনেরা।
সম্পূর্ণার বাবা মোহন গাইন বলেন, টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, খুলনা, ঢাকা ও ভারতের বেঙ্গালুরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরেও একমাত্র মেয়েকে সুস্থ করতে পারিনি। বেঙ্গালুরু থেকে ভারতের মাদ্রাজে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা। কিন্তু সেখানে ব্যয় হবে দশ লাখ টাকার বেশি। জমানো ও জমি বিক্রি করা টাকা দিয়ে এতদিন চিকিৎসা করাতে করাতে এখন আর ভারতের মাদ্রাজে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তাই একমাত্র মেয়েকে সুস্থ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করি।
শিশুটির মা প্রজ্ঞা গাইন বলেন, মেয়েটি হাঁটাচলাও করতে পারে না। সব সময় কোলে রাখতে হয়। বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটি করে। একমাত্র মেয়ের দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাতেও পারিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ আমার মেয়েটিকে বাঁচাতে আপনারা সাহায্য করুন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বিজয় বাড়ৈ বলেন, পাঁচ বছরের মেয়েটাকে সুস্থ করতে অনেক টাকা নষ্ট করেছে মোহন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করতে করতে এখন শুধুমাত্র বাড়ির জায়গা টুকুই আছে। আর ভারতের মাদ্রাজে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই ওদের। তাই সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ওদের সাহায্য করার অনুরোধ করছি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মামুন বলেন, শিশুটির অসুস্থতার ব্যাপারে আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। শিশুটির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।