অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৪৯ পিএম
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ড। ফাইল ছবি
বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পেছনে কোনো ধরনের নাশকতা খুঁজে পায়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।
আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) রাতে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন নাশকতা বা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়নি। অন্য কোনোভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে তদন্তে এসেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েল বা সিগারেটের টুকরোর মতো কোনো উৎস থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে, যা মার্কেটের মাঝামাঝি জায়গায় লেগেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বঙ্গবাজারে সংগঠিত অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে ডিএসসিসি। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
তদন্ত কমিটির আজ সোমবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা জমা পড়েনি।
জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না পাওয়ায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে মঙ্গলবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে।
তদন্ত কমিটির সদস্য ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন গণমাধ্যমকে বলেন, তাদের কাজ ‘শেষ পর্যায়ে’, মঙ্গলবার তারা প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন।
ডিএসসিসির মালিকানাধীন বঙ্গবাজারের মূল মার্কেটের চারটি ইউনিট- বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগর ইউনিট ও আদর্শ ইউনিট ওই আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
বঙ্গবাজারের উত্তর পশ্চিম কোণে সাততলা এনেক্সকো টাওয়ার, তার পূর্ব পাশে মহানগর কমপ্লেক্স মার্কেটও পোড়ে আগুনে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বঙ্গবাজারের পশ্চিম পাশের সড়কের অপর প্রান্তের দুটি মার্কেটও।
সব মিলিয়ে ৫ হাজারের মতো দোকান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ডিএসসিসির হিসাব।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনার জন্য ডিসিসিআই বেশকিছু সুপারিশ করেছে।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত বা স্বল্প সুদে বিশেষ মেয়াদি ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা প্রদান, ইতোমধ্যে যারা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের মেয়াদি, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ও ক্যাশ ক্রেডিট ঋণ গ্রহণ করেছেন তাদের ঋণের সুদহার কমানোসহ ক্ষেত্রবিশেষে ঋণের ধরনের ওপর ভিত্তি করে কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা এবং সে পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণকে খেলাপি হিসাবে ঘোষণা না করা।
পাশাপাশি সরকারের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় আর্থিক ক্ষতি নিরূপণপূর্বক সহজ শর্তে প্রদত্ত ঋণসমূহের আওতায় নিয়ে আসা। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিসিসিআই জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সুপারিশগুলো বিবেচনা করলে ব্যবসায়ীদের দ্রুত পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জীবনাযাত্রাও স্বাভাবিক হবে।