নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০৩ পিএম
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। ছবি: সংগৃহীত
চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বৈঠক করেছে। আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) চীনের কুনমিংয়ে ওই বৈঠকে বর্ষার আগে প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প শুরুর বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে অংশ নিতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন কিছুটা নিঃশব্দে কুনমিংয়ে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে গত দুই বছর ধরে কাজ চলছে। যার আওতায় প্রাথমিকভাবে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে চায় মিয়ানমার। এ লক্ষ্যে একটি তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।
তাদের আগ্রহে আপত্তি নেই বাংলাদেশের। তবে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ কিছু শর্ত দিতে চায় ঢাকা। এর মধ্যে আছে পরবর্তীতে দ্রুত দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন শুরুর নিশ্চয়তা।
ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে একটি প্রতিনিধি দল বছরের শুরুতে কক্সবাজার পরিদর্শন করেছে এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করেছে।
এছাড়া গত মার্চে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ মোট ১১টি দেশের কূটনীতিকদের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি করা বিভিন্ন কাঠামো ঘুরিয়ে দেখানো হয়।
এ বিষয়ে একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হলে বর্ষার আগে প্রত্যাবাসনের প্রথম ধাপ শুরু করা সম্ভব হবে। প্রথম ধাপে অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত কারণে সংখ্যাটি কম হবে। প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন জটিলতা আছে এবং কম সংখ্যক রোহিঙ্গা পাঠিয়ে সেগুলো চিহ্নিত করাই প্রাথমিক উদ্দেশ্য।
এদিকে ফের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে নীরবে ঢাকা সফর করে গেছেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। সফরে তিনি ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সে বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কিভাবে তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায় তা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা সবসময় আশাবাদী, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফেরত যাবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের বিশেষ দূতের কোনো পরামর্শ ছিল কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (চীন) কাজ করছে অনেক দিন ধরে। শুধু তারা (চীন) না, অনেকেই কাজ করছে।
চীনের বিশেষ দূত মিয়ানমার গেছে, বাংলাদেশও সফর করে গেছেন। তাহলে বেইজিং কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কি না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি জানি না। আমরা আশা করি, তারা (রোহিঙ্গা) যত তাড়াতাড়ি যায় তত আমরা খুশি।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চীনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-মিয়ানমার বৈঠকে প্রত্যাবাসন শুরু করতে রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে প্রয়োজন হলে একাধিক প্রতিনিধিদলকে কক্সবাজার পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।