ঈদযাত্রায় মহাসড়কে মোটরসাইকেলের আধিপত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৫ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২১ পিএম

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে গ্রামে ছুটছে মানুষ। বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন থেকে শুরু করে যে যেভাবে পারছেন যাচ্ছেন নিজ গন্তব্যে। ঈদযাত্রায় এসব যানের পাশাপাশি মহাসড়কে দেখা যাচ্ছে  দেখা যাচ্ছে মোটরসাইকেলের আধিপত্য। প্রচুর মানুষ এবার দুই চাকার এই বাহনে করে গ্রামে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক ও ফেরিঘাটগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেলের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। মহাসড়কে সাঁই সাঁই করে ছুটে চলছে অসংখ্য বাইক।

ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস ছিল গতকাল মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল)। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বিশেষ ছুটি ঘোষণা করায় গতকালই বহু মানুষ বাড়ির পথ ধরেছেন। বাস-লঞ্চ-ট্রেনে চেপে তারা রওনা হয় গ্রামের পথে।

ধারণা করা হচ্ছে এবারের ঈদে সোয়া কোটি মানুষ গ্রামে যাবেন। তাদের মধ্যে ২৫ লাখই যাবেন বাইকে চেপে। এবার মহাসড়কে বাইক চলাচলে বাধা না থাকায় গতকাল থেকেই এই যানে বাড়ির পথ ধরেছেন বহু মানুষ।

মহাসড়কগুলোতে ঘরমুখো মানুষকে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চাপ বেড়েছে অন্য দিনের তুলনায়। এসব যানের সঙ্গে যোগ হয় মোটরসাইকেল। দুই চাকার এই যানের বেশি চাপ বেশি দেখা গেছে শিমুলিয়া ঘাট এবং যমুনা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় হাজারের ওপর মোটরসাইকেলের জটলা দেখা যায়। এছাড়া ফেরিতে করে পদ্মা পার হয়েছে বহু মোটরসাইকেল। এসব বাইক দখল করে রাখে ফেরিঘাটের রাস্তা।

ঈদযাত্রার ছুটির প্রথম দিন ভোর থেকেই উপচেপড়া ঢল নামে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। ভোর থেকেই শিমুলিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাটে জড়ো হতে থাকেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। ভোর ৬টায় থেকে শিমুলিয়া থেকে মাঝিকান্দির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতেই বাইক ও যাত্রীতে ঠাসা ছিল।

৪ নম্বর ঘাটের পন্টুন থেকে অ্যাপ্রোচ সড়ক পর্যন্ত ছিল মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। একটি ফেরি আসার সঙ্গে সঙ্গে যে যেভাবে পারছেন ফেরিতে উঠছেন। 

বাইকের দাপটের চিত্র দেখা গেছে উত্তরবঙ্গের পথেও। এই পথে এমন যানের চাপ ছিল সবচেয়ে বেশি। যমুনা সেতুতে মোটরসাইকেলের চাপ বেশি থাকায় যানজটের কবলেও পড়তে হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টা থেকে বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৮টা গত ৩২ ঘণ্টায় পদ্মা সেতু‌তে রেকর্ড সংখ্যক গাড়ি পারাপার হ‌য়ে‌ছে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি ছিল। গত ৩২ ঘণ্টায় সেতুর দুই টোল প্লাজা দি‌য়ে ৪১ হাজার ২৫১টি পরিবহন পারাপার হ‌য়ে‌ছে। এর ম‌ধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭০০।

বঙ্গবন্ধু সেতু পারের অপেক্ষায় থাকা বাইকার রাসেল মাহমুদ বলেন, বাইকে ঝক্কি ঝামেলা কম। বাসে বাড়ি যেতে হলে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। কষ্ট করলে টিকিট করলেও আবার গাড়ির অপেক্ষা থাকতে হয়। কিন্তু বাইকে গেলে এসব সমস্যা থাকে না। এসব বিবেচনায় নিয়ে বাইকে করেই গ্রামের বাড়ি রংপুরে রওনা হয়েছি।

তার পাশেই সেতু পারের অপেক্ষায় থাকা আরেক বাইকার সোহেল রানা বলেন, বগুড়া যাওয়ার জন্য সকালেই গাজীপুর থেকে রওনা হয়েছি। বাড়ি গিয়ে অনেক আত্মীয়ের বাড়ি যেতে হবে ভেবে বাইকে নিয়েই রওনা হয়েছি।

ঈদযাত্রার বাইকের এমন আধিপত্য দেখে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, এবার মোটরসাইকেল আরোহী বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য যানবাহনের ওপর চাপ যেমন কমেছে তেমনি ভাড়ার নৈরাজ্যও কিছুটা কমেছে। তবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। কারণ মোটরসাইকেলে বেশি দুর্ঘটনা হয়। ঈদের পরে বাস্তব চিত্র পাওয়া যাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh