লিপস্টিক

খালিদ মারুফ

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ০৩:২৯ পিএম

অনুগল্প। প্রতীকী ছবি

অনুগল্প। প্রতীকী ছবি

খুনটা অনিবার্য হয়ে গিয়েছিল। সময় এত অল্প ছিল যে, দ্বিতীয় বিকল্প নিয়ে ভাববার সুযোগ আমি পাইনি। খুনটা আমি করেছি আমার বন্ধু বাদলকে। সঙ্গে বাহার ছিল, বাহার খুনে অংশ নেয়নি; দরকারও ছিল না। খুনটা আমি করেছি সেগুন গাছের ছাল ছাড়ানো দা দিয়ে।

সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় এ ধরনের দা দেখা যায়। যেমন ওজন তেমনি ধারালো। এ অস্ত্র দিয়ে খুনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যক্তির সাহায্য প্রয়োজন হয় না। তবে বাহার বুঝতে পারছিল আইন এ কথা শুনবে না। তাছাড়া আমরা তিনজন পরস্পরের বন্ধু হলেও আমার প্রতি বাহারের পক্ষপাত সবসময়ই ছিল।

সুতরাং বাদলের লাশ কায়দা করে পলিথিনে মুড়ে গাড়ির ব্যাকডালায় রাখার ক্ষেত্রে ও হাত লাগিয়েছিল। এটুকুই। পথে কোথাও লাশটা ফেলে দেওয়ার চিন্তাটা আমরা বাদ দিয়েছিলাম। গাড়ি আমিই চালাচ্ছিলাম, ভারমুক্ত। বাদলকে ব্যাকডালায় রেখে পাহাড়ি রাস্তায় এত চমৎকার ড্রাইভ করতে পারব, ভাবিনি।

ওখানে আমাদের তিনজনেরই যাওয়ার কথা ছিল। যে বিয়েটা আমি করছি সেটাও বাদলকে খুন করার মতোই অনিবার্য। ও বাড়ির লোকেরা তিনজনের জায়গায় দুজনকে দেখে কী-যেন দু-এক কথা বলার চেষ্টা করেছিল, শেষ পর্যন্ত বলেনি। বাদল যদিও আমাদের সঙ্গেই আছে, গাড়ির ব্যাকডালায়, লাশ হয়ে। বিয়ের আগ-মুহূর্তে মা ফোন করেছিল একবার। কথা-বার্তায় কোনো উদ্বেগ-অস্বাভাবিকতা ছিল না আমার।

ফলে মা কিছুই বুঝতে পারেনি। মা আমার বউ-বাচ্চার খবর নিচ্ছিল। ফোন রাখার পর একবার আমার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা মনে পড়ে। তবে সেটা সঙ্গে সঙ্গেই ভুলে যাই। বাদ সেধেছিল বাদলই, আবার। রাতে যখন দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘোমটা ওল্টাই, দেখি তার ঠোঁট জুড়ে বাদলের রক্ত লেপ্টে আছে। আমি ওখানে মুখ লাগাই, নোনতা স্বাদে নিশ্চিত হই, ওটা রক্তই এবং এ রক্ত বাদলেরই হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh