বান্দরবানের পাহাড় থেকে ৩ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৩, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ০৮ মে ২০২৩, ০৮:১৬ পিএম

পাহাড় থেকে উদ্ধার হওয়া লাশ। ছবি: বান্দরবান প্রতিনিধি

পাহাড় থেকে উদ্ধার হওয়া লাশ। ছবি: বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি গহিন পাহাড় এলাকা থেকে তিনজন গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ সোমবার (৮ মে) দুপরে উপজেলা সদর থেকে দশ কিলোমিটার দূরে পাইক্ষ্যং পাড়া এলাকা থেকে অজ্ঞাত এই তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়ে বলে জানান পুলিশ।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতে পরিচয় পাওয়া না গেলেও নিহতরা সবাই বম সম্প্রদায়ের বলে জানিয়েছেন রোয়াংছড়ি থানা ওসি আব্দুল মান্নান।

ওসি আব্দুল মান্নান বলেন, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাইক্ষ্যং পাড়ার রিজার্ব এলাকায় অজ্ঞাত তিনজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। দুপুর সোয়া তিনটার দিকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর জন্য আইনগত প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে ৭ এপ্রিল রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কের খামতাং পাড়ায় দুটি সশস্ত্র সংগঠনের  (কেএনএফ-ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আটজন নিহত হয়। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিহত ওই আটজনই বম সম্প্রদায়ের। তার মধ্যে ছয়জন রুমা পাইন্দু ইউনিয়নের জুরভারাং পাড়ার বাসিন্দা। বাকি দুজন রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের পাইক্ষ্যংপাড়া এবং রনিন পাড়ার বাসিন্দা।

সে সময় গোলাগুলিতে আটজন নিহতের ঘটনার পর ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে পাড়া ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পাড়া ছাড়ে খামতাং (তিনটি পাড়ার লোকজন খামতাং পাড়ার নামে বসবাস করে) পাড়ার খিয়াং জনগোষ্ঠীর ৯৭ পরিবার। তার মধ্যে রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় ৫৩ পরিবার। 

রুমা উপজেলার দিকে চলে ৪৪ পরিবার। তার মধ্যে বম কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নেয় ২২ পরিবার। বাকি ২০ পরিবার যার যার আত্মীয়স্বজনের ঘরে উঠে।

তার কয়েক দিন পর ভয় ও আতঙ্ক পেয়ে রোয়াংছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আত্মীয়স্বজনের ঘরে আশ্রয় নেয় পাইক্ষ্যং পাড়ার আরো ৩০০ পাড়াবাসী। পাইক্ষ্যং পাড়াবাসী কিছু দিন পর ফিরে গেলেও খামতাং পাড়াবাসী ফিরে যায় ১৭ দিন পর। রোয়াংছড়ি উপজেলায় আট হত্যাকাণ্ডের এক মাস পার না হতেই আবারো ঘটল তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

গত বছরের অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় কেএনএফ, স্থানীয়ভাবে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার হিল ফিন্দাল শারক্বীয়া’র বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব। কখনও কখনও তাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।

মার্চের শুরুর দিকে অভিযানের মধ্যে ‘আতঙ্কে’ রুমা ও আশপাশের এলাকা থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। অন্তত ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সে সময় বন্ধ হয়ে যায়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকায় রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশী-বিদেশী পর্যন্ত ভ্রমণ এখনো পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh