অতিরিক্ত ঘাম যেসব রোগের লক্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৩, ১২:১৪ পিএম

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

গরমে ঘাম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ঘামের সঙ্গে শরীরের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। আর ঘাম হলে শরীরের অতিরিক্ত পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের তাপমাত্রা নেমে যায়। স্বাভাবিক মাত্রায় ঘাম সবারই হয়ে থাকে। ঘাম শরীরের অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রক্রিয়া। বরং ঘাম না হওয়াও কখনো বড় ধরনের অসুস্থতার লক্ষণ।

তবে অতিরিক্ত ঘামলে একটু সচেতন হতেই হবে। কারণ অতিরিক্ত ঘাম শারীরিক বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হতে পারে। আবার অনেকের মুখ ও শরীরের তুলনায় হাতের তালুতে বা পায়ের পাতায় ঘাম বেশি হয়। একে হাইপার হাইড্রোসিস বলে।

অতিরিক্ত ঘামও যেমন শারীরিক কিছু রোগের লক্ষণ আবার না ঘামলেও শরীরে থাকতে পারে নানা অসুখ। আর গরম ছাড়াই যদি আপনি ঘামেন তাহলে বুঝতে হবে বড়সড় রোগের লক্ষণ।

ভারতের অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সিনিয়র ইন্টারভেনশন্যাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. বিকাশ মজুমদার মনে করেন, বেশকিছু বড় অসুখের পূর্বলক্ষণ হলো অতিরিক্ত ঘাম।

অতিরিক্ত ঘাম যেসব রোগের লক্ষণ:

হৃদরোগ: হার্টের কোনো সমস্যা হলে আপনার অবশ্যই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দেখা দেবে। ঘামের সঙ্গে উপসর্গ হিসেবে থাকতে পারে বুক ধড়ফড়, বুকে ব্যথা, কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং বুকে চাপ অনুভব ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। হার্টের গতি কম বা বেশি হলে কিংবা হার্টে ব্লক থাকলে শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হবে।

ডায়াবেটিস: অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক আছে। ডায়াবেটিস রোগীদের হঠাৎ ব্লাডসুগার কমে গেলে শরীরে অস্বস্তির সঙ্গে প্রচুর ঘামের সৃষ্টি হয়।

থাইরয়েড: থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতার কারণে বেশি ঘাম হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপার থাইরয়েডের জন্য মানুষের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়, ফলে রোগীর খিদে বেড়ে যায়। কিন্তু ওজন কমতে থাকে। সেইসঙ্গে বেড়ে যায় মাত্রারিক্ত ঘামের প্রবণতাও।

ব্রেন স্ট্রোক: হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা, শরীরে প্যারালাইসিসের মতো অনুভূতি কিংবা স্ট্রোকের পূর্বে বেশ কয়েকদিন প্রচুর ঘাম হতে পারে।

নিউরোলজিক্যাল সমস্যা: মাথায় টিউমার, খিচুঁনির মতো যেকোনো নিউরোলজিক্যাল সমস্যার প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। তাই সঠিক সময়ে অতিরিক্ত ঘামের কারণ খুঁজে বের করতে পারলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

টেনশন ও ভয়: শরীরে কোনও স্ট্রেস, টেনশন বা ভয়ের কারণ হলে অ্যান্ড্রিনালিন ও নন্-অ্যান্ড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গিয়ে অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যায় এবং ঘামের সৃষ্টি করে।

রক্তে ইনফেকশন: যদি আপনার রক্তে ইনফেকশনের সমস্যা থাকে, তবে তা আপনার শরীরকে প্রায়ই উত্তপ্ত করে তুলবে। এ সমস্যায় ব্লাড প্রেশার অনেকটাই কমে যাবে। এ সমস্যায় হার্ট চাহিদা অনুযায়ী পরিমিত রক্ত পাম্প করে শরীরকে প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। এক্ষেত্রে রোগীর দেহ ঠান্ডা হয়ে প্রচণ্ডমাত্রায় ঘাম বা শীতল ঘাম নির্গত হয়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।

এছাড়া বিভিন্ন কারণে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। যেমন:

  • কেউ যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করে, নার্ভাস থাকে বা মানসিক চাপে থাকে তাহলে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। 
  • শারীরিক দুর্বলতা থেকেও ঘাম বেশি হয়। পাউডার ব্যবহার থেকেও ঘাম দূর করার পরিবর্তে তা আরও বাড়িয়ে দেয়। 
  • অতিরিক্ত ধূমপানও ঘামের কারণ হতে পাতে।
  • মসলাযুক্ত, ঝাল বা তৈলাক্ত খাবার অতিরিক্ত খেলেও বেশি ঘাম হতে পারে।
  • আয়োডিনযুক্ত খাবার যেমন- ব্রোকোলি, পেঁয়াজ, খাবারে অতিরিক্ত লবণ খেলেও ঘাম বেশি হতে পারে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh