সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৩, ০৮:৩৯ পিএম | আপডেট: ১৩ মে ২০২৩, ০৮:৪৫ পিএম

জেলে পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

জেলে পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছবি: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি বাড়ছে এবং দেশের উপকূলের সঙ্গে এর দূরত্ব কমছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের উপকূলীয় আকমল আলী ঘাট, রানী রাসমনিঘাট ও পতেঙ্গা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় পাঁচ হাজার জেলে পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আজ শনিবার (১৩ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হুছাইন মুহাম্মদ।

এর আগে, শুক্রবার ১২ মে বিকেল থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। রাতে ৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেওয়ার পর এ তৎপরতা আরো বাড়ে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান উপকূলবর্তী পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলী এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ জেলেপল্লী পরিদর্শন করেন। তিনি এসময় তাদের সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন।

এদিকে শনিবার (১৩ মে) সকাল ১০টায় বাঁশখালী উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেন জেলা প্রশাসক। সেখানে উপকূলীয় লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন তিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন। এছাড়া ২ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে বলে জেলা প্রশাসন জানায়।

এদিকে জেলায় ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা আবহাওয়ার বার্তা প্রচারে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ বোট ও মেডিকেল টিম। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রাথমিক চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলায় ত্রাণকার্য হিসেবে চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার সঙ্গে ও জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও জেলেদের মাছ ধরার সরঞ্জামাদি ও ঘরের মালামাল, আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পিকআপ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ নিয়ে ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করবে। এর প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া, উপকূলীয় জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh